কবিতা
তপ্ত
দুপুরে তোমার আলতা মাখা পাদুখানি জলে রেখো
আমি
দেখবো কতখানি আলতার অপচয় হয়েছে,
কতখানি
লেগে আছে ও পায়ে তাজা রক্তের ফোঁটা।
সতী, অসতীর বিচার সভা বসে
তাত্বিকের বৈঠক খানায়,
মাকড়সার
জালে জালে ভোগলিপ্সার জারিজুরি,মতলববাজ।
খুব
জানতে ইচ্ছা করে সতীত্ব দেহে না মনে ?
শুক্রাণু
আর ডিম্বাণুতে নিষিক্ত হয়েই সৃষ্টি হয় প্রাণ,
মার
উদরে দশ মাসের অসহ্য যন্ত্রনায় কোল পায় সন্তান,
মাকড়সা
সন্তানের মতো মাকে শুষে,শুষে পুরুষ হয়ে তোলে
ধ্বনি "অসতী"।
ভোরের
আলোয় উচ্চারিত যেমুখে হরিনাম,মা,মা ধ্বনি,ধর্মের দোহাই,
আকাশ,বাতাস বিদীর্ণ কলঙ্কিত
প্রাণ,মুখোশের আড়ালে -
সেই
মহান পুরুষই মজে থাকে সন্ধ্যার তিমিরে অসতী বারবনিতায় ?
হেডমুন্ড
উর্দ্ধপদ
স্বাধীনদেশে
নতুন ধারণ হেডমুন্ড ,উর্দ্ধপদ
আজ
দেখি ভাই ঘরে,পরে " নানা মতের
নানা পথ "
ঠোঁটের
পরে আঙ্গুল রেখে জীবন পথের নতুন চলা
গোবেচারা
, নিরীহজনের হিসেব করে কথা বলা।
চোখ
থাকতেও অন্ধ সবে,ভয়েই মরে কলিকাল
ভীমাবেগে
জাগবে কবে রুদ্রবেশী মহাকাল ?
মুখ
বন্ধ ,বলছে হুকুম বাহির হলেই ভূস্বামী,
হুকুম
মানার ধমকানি আজ,ক্ষমতার কি ইতরামি।
মরণ
বরণ যন্ত্রনাগুলো পুড়ছে চিতার দাবানলে ,
প্রেম
যমুনায় ডুব দিয়ে যায় টাকায় পোষা বাহুবলে ।
কুলি,কামিন, দলিত গুলো ককিয়ে মরে
পথের ধারে ,
প্রতিবাদে
কাঁপাই ভুবন কটা মাথা আমার ঘাড়ে?
আকাশ
জুড়ে মেঘের ঘটা, বাদল আজ নির্জলা,
গ্রিনহাউসের
রমরমা ভাই ,ভবিষ্যৎ নিষ্ফলা।
গাছ
কেটে ফাঁক, ডোবা ভরাট ,টাকা ছড়ায় বহুতলে
দিন
আনি আর দিন খাইরা খায় হাবুডুবু গভীর জলে ।
শুধু
তোমারই জন্যে
জানি
এখনও তুমি গহীনে ভয় পাও
তোমার
আঙিনায় রাতের নিশাচরের নিঃশব্দ বিচরণ
তোমার
হৃদয় নিঃসৃত শ্বাসরুদ্ধতায়-
আমি
দিশাহারা। তোমার বুকফাটা অকুলতার ধ্বনি বয়ে আনে পরিযায়ী পাখি,
আমি
ত্রস্তে হাত রাখি দরজায়, আমি পথগামী হই, ক্ষিপ্ত,উন্মাদ।
আমার
বাড়ানো হাত তুমি কখনো স্পর্শ করোনি,করোনি আপন,
চিঠিও
লেখনী সুখে ও অসহায়তায়, বিশ্বাসহীনতায়
দগ্ধেছো,
বিপথ
গামিতায় ক্ষত-বিক্ষত তোমার নিষ্ঠুর ভাগ্যের পরিহাস।
তবে
কেন আমার জন্মদিনে তোমার এত উচ্ছাস?
নিভৃতের
অন্ধকারে কেন ভরাও ভালোবাসার অলীক স্বপ্নের কল্পনায়?
নির্ঝরের
স্বপ্ন ভঙ্গ করে কেন নির্লজ্জ অনুকরণে লিখে যাও দুঃসাহসী কবিতা ।
অক্ষর
অক্ষয় হোক সকল জীবনের জন্যে,এইটুকু প্রার্থনা,
অন্ধকারে
নয়,সূর্যালোকে প্রাণ পাক কবিতা,সৃষ্টি হোক বোধোদয়
অক্ষর শিল্পীর কলমে,
প্রেমাঞ্জলির
অপেক্ষারা গোধূলি আলোয় আলোকিত হোক,
সোহাগে, সঙ্গমে পূর্ণতা পাক ক্লান্ত পথিক দিনের শেষে ঘরে ফিরে।
লুপ্ত
চেতনার হাতধরে অনুতপ্ত পদভারে ফের যদি ফিরে আসো
যদি
দেখো আমি নেই বাতায়নে তোমারী অপেক্ষায়-
সবটুকু
অনুশোচনা তুলে রেখো আমার সাজানো দেরাজে,
আর
ভালোবাসার রাজমহলে হাজার ঝাড়বাতি জ্বলছে দেখে
অবাক
হয়ো না,বহু হতাশার মাঝে এতো শুধু তোমারি অপেক্ষায়।
চলন্তিকা
কংক্রিটের
জঙ্গলে -
এখন
হাঁসফাঁস প্রান ,নিশ্বাসে দুর্গন্ধ ,
দুই
ফুসফুস এখন বিষাক্ত পোকার দখলে ।
বন্ধ
ডানায় স্তব্দ পাখিদের কান্না,
নীলাকাশ
ঢেকে গেছে প্রতারণার কালো মেঘে ,
ইঁটের
পাঁজরে থেমে গেছে নিত্য স্বপ্ন দেখার স্বাদ।
এখন
ঘুমের বড়িতেও ঘুম নেই -
অশান্ত
প্রহর , অবৈধ নিঃসঙ্গতা খেলা করে প্রেম,
ব্যর্থতার
গ্লানি বয়ে বয়ে মৃত্যুচাই স্লোগানে ভরে
অষ্টপ্রহর ।
দূষিত
পিতৃত্ব ,অসহায় মাতৃত্ব ,অভিশাপ ঘিরে ধরে -
লোভের
পারদের দুঃসহ তাপমাপা , উন্মত্ব কামনায় হাত
ধরে।
বিস্মৃত
হিতাহিত জ্ঞান,আপন ঔরসে পাপ ঢালে।
বরফ
রক্তের আঠার মধ্যে -
থেমে
গেছে প্রানের সূর্যোদয় ।
আর
চাই নাত,কর অন্ধ,বধির
,চাই নাত থাকতে নামজপ অষ্টপ্রহর।
সুনিপুণ
হাতে বুনেছ ছলাকলার কারুকার্য ,
বাতাসে
ভাসে বেসুরো গান ,বেলাশেষে -
ব্যঞ্জর
তালে তালে নাচছে মাতাল কুষ্ঠরোগী ।
পর্দার
আড়ালে শোনা যায় নির্মম হাসি ,
রাজপথে
তরিয়ানন্দে খেলা করে প্রহসন ,পৃথিবী মুখ ঢাকে
পঙ্কিলতায়।
বাঘনখের
রক্তাক্ত আলপনায় ছুটছি শুধু ছুটছি প্রানপন।
কেন
আত্মসুখের মিছিলে পা মেলাই -
সম্পর্ক
দুইপায়ে দলে দলে ?
ভালোবাসার
বুকফাটা আর্তনাদে স্বার্থ হাসে মহাসুখে।
শ্রাবণ
ধারায় ২৪-০৭-২০১৯
"মেঘ
জমেছে ঈশান কোনে বৃষ্টি হবে এক্ষুনি"
উদোম
গায়ে ছুটবো মাঠে ভিজবে দেহ তক্ষুনি।
আয়
ছুটে আয় সঙ্গী, সাথী ছেলেবেলার দিনগুলি
স্বপ্নমাখা
সুখের সেদিন আজও দেয় হাততালি।
তপ্ত
বায়ু,কমায় আয়ু,মরুভূমির
কদর্য ,
ক্ষেত
শুকনো, মাঠ চৌচির কোথায় পাবো আহার্য?
আজ
শ্রাবণে বৃষ্টিধারা আয় না ঝেপে এই প্রাণে ,
দগ্ধপ্রাণে
,শীতলতায় একটু বাঁচার আহ্বানে।
প্রবীর কুমার চৌধুরী: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন