সম্পাদকমণ্ডলী




কাকালি দাশ ব্যানার্জী: ছোট থেকে সংসারের ব্ল্যাকহোলে পড়েও যে সাঁতার কাটতে শিখে গেছে। স্কুলে আর কলেজে পড়ার সময় থেকেই লেখালেখির শুরু। স্কুলে যেমন লেখালেখিতে উৎসাহ জুগিয়েছেন  স্কুলের দিদিমণিরা, তেমনই বাড়িতে মা। প্রথম ছড়া লেখা মাত্র চার বছর বয়সে। তাতে হয়ত ছন্দের হিসাব ঠিক ছিলো না। কিন্তু তার মা বুঝেছিলেন তাঁর মেয়ের মধ্যে একটা সৃজনশীল মনন আছে। তারপর থেকে স্কুলের ম্যাগাজিন, কলেজের দেওয়াল পত্রিকায় তার লেখা স্থান পেয়েছে। মাত্র পনেরো বছর বয়েসে মাকে হারিয়ে সংসার সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়েছে, হারিয়ে গেছে লেখক হবার স্বপ্ন। মাত্র চার বছর বয়েসের বোন কে কিভাবে মানুষ করবে, কিভাবে নিজের লেখাপড়া শেষ করবে সেই চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছিল সে, তার উপর ছিল অসুস্থ বাবা। কাকলির প্রথম নিজের ছড়ার বই বের হয়েছিল যখন সন্তানকে পড়াতে শুরু করে। ছোটদের উপযোগী করে একটি ছড়ার বই লেখে সে। তাতে সাধারণ জ্ঞানকে ছড়ার ছন্দে ছোটদের মনের মতো করে লেখে সে। ছোটদের স্কুলে তা পাঠ্য বই হিসাবে পড়ানো হতো।পরবর্তীতে সন্তানের লেখাপড়ার দিকে বেশী মনোনিবেশ করার কারণেই বেশ কিছু বছর লেখার দুনিয়া থেকে সরে এসেছিল কাকলি। তবে আজও পড়াশুনাই তার ধ্যান জ্ঞান। সারাক্ষণ ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে দিন কাটে তার। শারীরিক অসুস্থতার চক্রব্যূহে পড়েও যে জ্যোৎস্না জমায় কথকতায় ছন্দের বিন্যাস আনবে বলে। পেটের তাগিদে দিদিমণিগিরি করার ফাঁকেও কাকলির কলম অক্ষরের সাথে প্রেম জমায়। আদ্যোপান্ত এক কবিমন যে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরেও কবিতার সাথে প্রেম করছে বলে স্বামী বা মেয়ের কাছে বকা খেলে ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে ফেলে এমন একটা শিশু মন বাস করে যার পোশাকের মধ্যে তিনি কাকলি দাশ ব্যানার্জী। তিনি কবিতা লেখার পাশাপাশি প্রচ্ছদ শিল্পীও বটে। তুলি আর রঙও তাঁর সঙ্গী। কবিতা লেখার সাথে সাথেই চলে তার আঁকা, অভিনয়তেও যিনি যথেষ্ট সাবলীল সে, মনের আনন্দে রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দ নজরুলের লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন। কাকলি অকপটে বলে তার মধ্যে এই শিল্পী সত্তাটি গড়ে দিয়েছিলেন তার মা। আর আজ কবিতাই তার প্রেম। রং তুলি তার ভালোবাসা। সামনেই প্রকাশ পাচ্ছে কাকলির কাব্যগ্রন্থ।


বিপ্লব গোঙ্গোপাধ্যায়: জন্ম ৬ জানুয়ারি  ১৯৭২ পুরুলিয়া  জেলার শিয়ালডাঙা গ্রামে।  বাবা কবি মোহিনীমোহন গঙ্গোপাধ্যায়। মা গীতা গঙ্গোপাধ্যায়। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির শুরু পারিবারিক আবহে। শিক্ষা: বর্ধমান  বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে  ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর। পেশায় দামোদর  ভ্যালি কর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্মী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ:  সুসংবাদ  কিনতে যাব। হাইফেন  বসানো  বারান্দা। বিভ্রম  রঙের মেঘ। অপেক্ষা খরচ করি। নিরুত্তর  প্রশ্নের দ্রাঘিমা।  আঁধারে অঘ্রান। দূরত্বের প্রতিধ্বনি।  প্রকাশিত  গল্পগ্রন্থ: প্রান্তিক জানালা ও অন্যান্য  গল্প। এবং অস্পৃশ্য হাত। মাটির মহক। প্রকাশিত উপন্যাস:  আক্রান্ত  বৃষ্টিদিন। ছড়া। রাঙা মাথায় চিরুনি পুরস্কার ও সম্মাননা: ত্রিবৃত্ত পুরস্কার। মালীবুড়ো সম্মান। অনুপত্রী সাহিত্য পুরস্কার। কফিহাউস পুরস্কার। পূর্বাশা পুরস্কার। খড়্গপুর মহকুমা  তথ্য সংস্কৃতি বিভাগের বর্ষসেরা অনন্য সম্মান। জিরাফ পুরস্কার সহ অজস্র পুরস্কার।


মৌ মধুবন্তী: ১৯৯৯ সালে আমেরিকার পোয়েট্রি ডট কম থেকে ফিউচার কবিতার জন্য পুরস্কার প্রাপ্ত হন এবং পোয়েট্রি এন্থোলজিতে তার কবিতা ঠাঁই করে নিয়েছিল। ২০০১ সালে কানাডার ক্রস ভ্যারাইটি মাল্টিলিঙ্গুয়াল কবিদের সাথে কবির ইংরেজী কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা নিয়ে ছুটে যান কবি উত্তর আমেরিকা ছেড়ে দক্ষিণ আমেরিকার “আর্জেন্টিনা আন্তর্জাতিক বইমেলায়” - স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত তার কবিতা নিয়ে। কবি তার নিজের কন্ঠে উচ্চারিত কবিতা নিয়ে যান কানাডার  সুদুর অটোয়া, মন্ট্রিয়াল শহরে। বর্তমানে কানাডার টরেন্ট নিবাসী কবি কবিতাউৎসব অনলাইন পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে তিনিও একজন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, রক্তনদী একা, (২০০৬) অধরা আইফোন, (২০১১) বাতাসে বৃক্ষপ্রেম (২০১২), মন ওড়ে কলাবতী রাগে (২০১৬)। নুনের দুঃখ (২০১৯)। গল্প সংকলন, মন পুরাণে ম্যারিলিন মনরো (২০১৩)। প্রকাশিতব্য কাব্যগ্রন্থঃ “আমি একখন্ড বাংলাদেশ”- বইটি বাংলা, ইংরেজী ও স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত হবে ২০২০ সালের বাংলা একাডেমী বইমেলায়, বাংলাদেশে ও আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক বইমেলায়। অপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ ও বোদালিসিয়াস। দীর্ঘদিন ধরে গীতকবিতা রচনায় নিবিষ্টতা থেকে ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “দিনুবসাক মন”, “পঞ্চমী সুর”, “মা তুমি রাগ করো না”, “ চন্দ্রাবতী মধুবন্তী” ইত্যাদি। বর্তমানে বাংলাদেশে ও কোলকাতায় দুই দেশেই তার গান নিয়ে কাজ হচ্ছে।



রত্নদীপা দে ঘোষ: জন্ম- ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২। জন্মস্থান- কোচবিহার। শোরগোলহীন মাত্রাবৃত্তের শহর। পায়ে পায়ে পথ চলা। দিগন্তে দূরপাহাড়ের ঐক্যতান। চাঁদের আড়ালজলে তোর্সানৌকো। রাজহংসের শ্যামলিমা। রাজপ্রাসাদ ঘেরা বৃদ্ধ ঠাকুরদার ছায়াপথ। রূপ এবং কথামাঠ। ঠাকুমার লালপাড়। কস্তাচরণ। এখনো তেমনি তরুণ। সুনীল স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রথম স্কুলজীবন শুরু। তৃতীয় শ্রেণী থেকে সুনীতি একাডেমী। বকুলের সন্ধি বয়েস। সেইসব টরে এবং টক্কা এবং স্বরবৃত্ত  আলোড়িত করে , আলোকিত করে মননের আকাশ। বর্তমান ঠিকানা- বল্লারি, কর্নাটক মেঘালয়, আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ - ইত্যাদি প্রদেশেও বসবাস করা হয়েছে অতীতে, বিবসুত্র। এক কন্যার জননী। পড়াশুনো- এম এ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৫। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ-আমি ঈশ্বর হতে চাই (পত্রলেখা) ২০১২। মৃত্যুকে নিষিদ্ধ করো (পরশপাথর) ২০১২। ব্লাশ-on (পত্রলেখা) ২০১৩। m5/6 (পত্রলেখা) ২০১৪। ৩৬০ ডিগ্রী (পত্রলেখা) ২০১৫। আমারে মজাতে চায় (কবিতা ক্যাম্পাস)২০১৬। ছত্রিশ-বত্রিশ-চৌত্রিশ (কবিতা ক্যাম্পাস) ২০১৭। মামেকং শরণং (সিগনেট) ২০১৮। আমার নগ্নতা (বইতরণী) ২০১৮। রসুলনামা (সুতরাং) ২০১৮। খণ্ডন ভব বন্ধন (কবিতা পাক্ষিক) ২০১৯। আফসানা জোসেফ চট্টোপাধ্যায় (সুতরাং)২০১৯



শীলা বিশ্বাস: জন্ম ১৯৭২ সালে, সাঁতরাগাছি, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতে। পিতা নেপাল চন্দ্র চৌধুরী ও মাতা রেণু চৌধুরী। কলকাতা  বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি দায়িত্বশীল পদে কর্মরত (আয়কর বিভাগ, কলকাতা)। প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় স্কুলের পত্রিকা ‘মালঞ্চ’। পরবর্তী পর্যায়ে লেখালেখির শুরু শূন্য দশকে। লেখার বিষয় মূলত কবিতা, অন্যান্য প্রচেষ্টা  গল্প, প্রবন্ধ,শ্রুতি নাটক ইত্যাদি। নিয়মিত লেখালেখি বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক সাময়িক পত্র পত্রিকা  দেশ, কবিসম্মেলন, কবিতাআশ্রম, শুধু বিঘে দুই, কবিতাসীমান্ত,নবকল্লোল, অদ্বিতীয়া, তথ্যকেন্দ্র,লং জার্নি,রবি বারোয়ারি (দৈনিক যুগশঙ্খ), দুর্বাসা,শব্দ হরিণ, একুশ শতাব্দী, অর্কেস্ট্রা ইত্যাদি এছাড়াও বিভিন্ন ই-ম্যাগাজিনে। সম্পাদিত পত্রিকা ‘এবং সইকথা’ ই-ম্যাগাজিন (ত্রৈমাসিক) সম্মাননা ও পুরস্কার: কালী কিঙ্কর মিত্র স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ নেবুলা মেঘের মান্দাসে কাব্যগ্রন্থের জন্য (ঋতুযান সাহিত্য পত্রিকা)। সুকুমার রায় শিশু সাহিত্য সম্মাননা ২০১৬ (বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ ছড়া উৎসব পরিচালন পর্ষদ)। পাঠকের বিচারে সেরা ১৫ সম্মান (নবাঙ্কুর সাহিত্য পত্রিকা) ২০১৫।


হাসিদা মুন: হাসিদা মুন, ঝিনাইদহ   জেলার কালীগঞ্জ  থানার অধীনে দীঘারপাড়া  গ্রাম নিবাসী  বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব হাবিবুর রহমান ও  জোবেদা খাতুনের কন্যা এবং   বিশিষ্ট ব্যবসায়ী  জনাব শহিদুল হক টুটু'র  স্ত্রী। যশোরে  জন্ম হলেও তিনি তাঁর  স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি জীবন ঢাকাতেই কাটান। তিনি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  মনোবিজ্ঞানে এম এস সি ডিগ্রী অর্জন  করেন। স্কুল জীবন  থেকেই তাঁর লেখার হাতেখড়ি। বিভিন্ন দৈনিকের পাতায়, স্কুল বার্ষিকী, দেয়াল পত্রিকা এবং বিভিন্ন  ম্যাগাজিনে, লিখতে লিখতে  তিনি কবি হয়ে ওঠেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যার  জননী  এবং ঢাকা জেলায় বসবাসরত। তার প্রকাশিত গ্রন্থসমুহের মধ্যে ১০ টি কাব্যগ্রন্থ,  তিনটি শিশু কিশোর সাহিত্য এবং বেশ কিছু প্রবন্ধ রয়েছে।