বাতিঘর ও অন্যান্য কবিতা






কবিতা

বাতিঘর 

প্রথম আলো বলে কোনদিনই আমার কিছু ছিল না
হাঁটাপথে অন্ধকার দূর করতে করতে
নিজেকে যেটুকু দেখেছি ঘন কুয়াশার ভেতর
সেটুকুই আমার নিজস্ব বাতিঘর

আলো নিভে যাওয়ার ভয়ও তাই নেই
কোন গ্রহের ছায়া এখানে পড়ে না

অগ্নাশয়ে যে সূর্য জ্বলে -উত্তাপ ছুঁয়ে যায়
শিরা-ধমনী,স্নায়ুতন্ত্র ও পিটুইটারি

এক অগ্নিবলয় অতিক্রম করে
হাঁটছি শতবর্ষ ধরে জলছাপহীন।








চোখ

এই চোখ যেন বহুদিনের চেনা
চারপাশে এক ম্যাগনেটিক ফিল্ড
কাছাকাছি হলেই হারিয়ে ফেলি নিয়ন্ত্রণ।

চোখের গভীরে পাখির নীড়ের উষ্ণতা
তানপুরার তারে বাঁধা ধ্রুপদী সুর

রাগ সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান
টুং টাং সুরেই প্রবাহিত জীবনালেখ্য।

চোখের ফ্রেমে জ্বলজ্বল করে
ব্রক্ষ্মচর্য থেকে সন্ন্যাস








প্রচ্ছদে প্রেম

বেরিয়ে পড়া হয়তো যায় প্রেমের টানে
ফেরাটা যদিও অনিশ্চিত

পিছুটান কচুপাতায় জমা রেখে
যতটা এগোন যায় ততটাই জীবন

আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে জংশন
শটিং মল ও সার্ভিস রোড

ফাঁক-ফোকরে চর্যাপদের ঘ্রান পেলেই
প্রচ্ছদে ফুটে ওঠে আদিম সাক্ষর







আবরণ

এত উৎসব
             এত আয়োজন
                   তবুও
                ভেতরে ভেতরে
                     আমরা
                      
                      
      
                      এ কা

শূন্য গহ্বরে ডুবে যায়
                 অপ্রকাশিত
                    ভোর

বন্ধ দরজার এপাশে আকাশ
                   ওপাশে কিছু ফিসফিস
                    কিছু লেনদেন

কিছু গোপনীয়তা ঢেকে দেয়
                   রাতের আকাশ







বিভাজন

পুজো সবার না
কারো কাছে তা উৎসব
কারো কাছে শূন্যতা

একদিকে সাজগোজ মেহেন্দি
অন্যদিকে অগ্নিদগ্ধ মাঠ

ফাটা মাঠে সিঁথির সিঁদুর
ঝরে যায় বালিকা বেলা

অরণ্যের অন্ধকার একমাত্র সূর্য ছাড়া
আর কে বা ঘোঁচাবে!


তুলসীদাস ভট্টাচার্য: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত



২টি মন্তব্য:

  1. ভালো লাগল।কবি হেঁটে যান শতবর্ষ অতিক্রম করে....

    উত্তরমুছুন
  2. অতি সুন্দর কবিতাগুলি। প্রতিটি কবিতা এক অন্য চিত্রকল্প তুলে ধরেছে। "অরণ্যের অন্ধকার একমাত্র সূর্য ছাড়া
    আর কে বা ঘোঁচাবে!"
    পলাশ হালদার

    উত্তরমুছুন