আসুক বৃষ্টি ও অন্যান্য কবিতা








কবিতা

রেবা সরকার
 
আসুক বৃষ্টি

বাতি জ্বালো
আমার আঙ্গুল জড়িয়ে ধরে

আমি চাই মেঘ ধরো
বাহারকে সঙ্গে রেখে

নীরব মেঘের গান-বৃষ্টি

নদীতে বর্ষা নামেনি
শুকনো মাটি ও ঘাস

জলের কাছে আস্থা আমার বেশি
ভিজবে ছাদ নীল পোশাক

আমি চাই জমুক গভীর মেঘ
মেঘ জমুক ঘুমের পাদদেশে

ঝরঝর বৃষ্টিতে ভিজি আমরা






অমাবতি

আমি হাঁটতে পেরেছি
আঁকড়ে ধরেছি জীবন
জীবন কথায় বিশ্বাস
বিশ্বাস টুকুই ভালোবাসা

অটুট বন্ধনে মেঘ-পল্লবী
অবয়ব ভেজে মেঘ ক্রন্দনে
ওই যে ঝর্ণা পাহাড়
সুখি হও দুখি হও কত

ওই যে পৃথক  অশ্রু
অমাবতির থালা
পাহাড়ি ঝর্ণা মেঘবতী
আশ্বাস নিশ্বাসে কতযুগ

সে তো তুমিই জানো

তোমার সম্মতি পেলে
হেঁটে হেঁটে চলে যাই
দুরন্ত টিলায়





মৃত নৌকা

মৃত নৌকারা ভাসছে।

নাব্যতা ভোলা নদীর চর ও ভাসছে
উঠে দাঁড়াই
পলিতে পড়ে থাকা আমি জিওল কীট
ভেসে যায় কতো মাছ
স্বাস্থ্যবতী দেহ
দেহ মোর জ্বালাহীন।

এদিকে আকাশ ওলোট পালোট
যখন তখন নিম্নচাপ
দিঘির পাড়ে নদীর চরে
হেঁটে যায় জীবন্ত জীব।

উদোম বুকে হাঁক দিব।

উদোম বুকে হাঁক দিব
নদীকে গুটিয়ে রেখো না

মৃত নৌকারা ভাসছে






অপুষ্ট নারীর কাছে

অপুষ্ট নারীর তুমি কাঙাল পুরুষ।

দেহ থেকে ঝরে পড়া বোহিমিয়ানি রক্ত
সাগরের জলে অপাঙ্ক্তেয় মুখচ্ছবি
ঢেউ ঢেউ বর্ষণে বিদ্ধ চিবুক
লেলিহান জ্বালা।

আজ, এক্ষুনি আমি মুগ্ধা
অথচ, সেদিনের চোরামুখ
অপেক্ষারত চোখ
কতশত নিমেষ গুনছিল।

এখন সময় কমে গেছে
ভাত জল দিব আমি
শান্ত নদীর কাছে। একা
ভক্তি ভরে খাব
অনন্ত ছাই।

একদিন, অন্তর গত হলে
গতির চাকা খুলে গেলে
নির্বাক না হয়ে
প্রচন্ড খিদের কথা
বলে ফেলি।

শেখার সময় ফুরোয় না
কষ্টিপাথরের বুকে জমা
অনন্ত আকাশ অনন্ত ঢেউ
প্রচন্ড ভাষা

অপুষ্ট নারীর ক্ষতবিক্ষত দেহ বুক
পুরুষ কাঙাল হলেও হতে পারতো






হৃদয় জড়ানো উন্মাদনা

এখানে কার্তিক মাসে আমন ধানের বিকেল
শীত শীত সকাল
নবান্ন দুপুর ঘনিয়ে আসা পরমান্ন সুখ
সুখী হয় পড়ন্ত বেলা

সুখী হও তুমি। তোমার হৃদয় জড়ানো উন্মাদনা
এ উন্মাদনায় চঞ্চল মৌমাছি
সাঁতরে চলে মাছ
ঝিরঝিরে বৃষ্টি বাতাস

সব পাখি শীত খায়

আমি ভায়োলিনে শঙ্করী
পাশে আহির

সেদিন বলেছো ফিরো না এখন
সব কাজ সেরে আমিই চলে যাব

রেবা সরকার: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন