কবিতা
পাপ ও পাপী
১. বিবেক
শিরদাঁড়া ধরে নেমে আসছে সাপ
কঠিন হয়ে থাকি।
যেভাবে এতকাল, পাথর ভেবে নিজেকে
সাজিয়েছিলাম ধুলো ও শ্যাওলায়,
সেই পণ শেষ হয়।
ঘুম ভাঙে অহল্যার,
পদস্পর্শ নয়,
সূর্যের আলোয় !
২. ধৈর্য্য
যতবার নামিয়েছি মাথা, ভেবেছ, মেরুদন্ডী নই।
খুব সহজেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় যে ঝড়ে
সে আগাছায় ঘাম জমে না বোধহয়!
এত স্বল্পায়ু ভেবেছিলে, ক্যান্সারও ভয়
পেয়েছিল।
আসলে ভাবোনি, কিভাবে কচ্ছপ
পৌঁছতে পারে পাহাড় চূড়ায়।
৩. ঈশ্বর
কতবার পরীক্ষা ধৈর্য্যের।
আমি ঈশ্বর চিনতে ভুল করেছি বারবার।
সেবার যুদ্ধের সময় যখন একটা একটা করে
ভাঙা
হচ্ছে ধর্মশালা, আদাজল খেয়ে প্রাণ
নিতে
নেমেছে ধর্ম
ভেবেছিলাম, ডুবুরির চোখ। সাঁতরে
উদ্ধার করবে
ভিজে শরীর কিন্তু
তুমিই চিনিয়ে দিলে 'মানুষ কখনও ঈশ্বর নয়।'
৪. জন্ম
আমাকে উদ্ধার করল যে অচেনা দেবদূত
হাত ধরে, যেন অন্য এক রাজ্য
যেখানে ঈশ্বর, রান্না করেন সন্তানের
মঙ্গলে।
আমার বোরখা সরিয়ে এঁকে দেন চোখ।
জ্বলজ্বল করে ত্রিনয়ন।
সমস্ত ধূলো আর শ্যাওলা
খসে পড়ে কি যেন চমৎকারে
আর থেকে থেকে
নড়ে ওঠে এক বোবা শিলা।
৫. পাপী
তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছি আমি।
কিভাবে আর কেন, সাপের জীবন?
কিভাবে আর কেন, পদস্পর্শ?
আমি তো পাপী নই, পাপী সে দাম্ভিক
যে চেয়েছিল পাথরে পা রেখে ঈশ্বর হতে।
অথচ আমি জীবন চেয়েছি বারবার,
আর তুমি মৃত্যু নয়,
যন্ত্রণা দিয়েছ শুধু !
সবর্না চট্টোপাধ্যায়: কপিরাইট লেখক
কর্তৃক সংরক্ষিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন