কবিতা
নিষ্পাপ
মুখের স্বর্গ
একটা
দমকা হাওয়ায় একান্নবর্তী সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এলাম
ছোট্ট
উঠোনের নরম হাওয়ায় গড়িয়ে গেল অনেকটা বছর
অথচ, একটা মিষ্টি
ফুল ফুটলো না
আমার
ছোট্ট উঠোনে।
যদিও
অনুভবে কোনও খামতি ছিল না...
দিন
রাত্রির পলে পলে তার অবয়ব দেখি
গন্ধ
পাই, হাসতে দেখি- হামাগুড়ি তাও...
কাকডাকা
ভোরে কত চেম্বারে চেম্বারে নাম লিখিয়েছি
কত
পরীক্ষা নিরীক্ষা,
উপদেশ...
অবশেষে
ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে
এ
মন্দির সে মন্দির করে গিলেছি কত চরণামৃত
তবুও
উঠোনে ফুটলো না একটা মিষ্টি ফুল
দু’জনের কাঙ্ক্ষিত
চোখের জল বাষ্প হয়ে বাতাসে মিশে গেল কতদিন
আধভাঙা
বিস্কুট অযত্নে পড়ে থাকলো চা কাপের গা ঘেঁষে
হায়
ঈশ্বর! একান্নবর্তী সংসার ছেড়ে তোমার বিশ্বাসী হলাম
তবুও
নিষ্পাপ মুখের স্বর্গ নেই,
খোকা নেই- খুকু নেই....
আগামীর
স্বপ্নরা বুনে যাবে বীজ
-
আমার
ফাগুন বিকেল ছুঁয়ে যাবে তোমায়
শিমুল
পলাশের ঘ্রাণ উৎসবে
তোমার
আঁচল ঠেসে বিবাগীর মতো বাতাসের বুকে
ভাসিয়ে
দেবে অপরাহ্ণের সোহাগী আমন্ত্রণ
এলোমেলো
বাতাস ঠেলে
দল
বেঁধে দাঁড়াবে এসে পাতা ঝরা গাছ
আমার
অস্তিত্ব বিলিয়ে দিয়ে
নিঃস্বের
মতো আশ্রয় খুঁজবো তোমার ওম পাওয়া বুকের মাঝে
ওদিকে
ফাল্গুনী আকাশ বসন্ত উৎসবের মতো
গায়ে
মেখে নেবে ধুলোর আলিঙ্গন
তোমার
চকচকে কালোমেঘের পাতার মতো দু’চোখের গভীরে
আগামীর
স্বপ্নরা বুনে যাবে বীজ....
অনাকাঙ্ক্ষিত
ছদ্মবেশ
একটা
অনাকাঙ্ক্ষিত ছদ্মবেশের খোলসে সেই কবেই তো
নিজের
সত্তাকে করেছি সমর্পণ
আজকাল
খোলসটা কেমন যেন আমার সত্তার ভিতর শেকড় পোঁতে
নিজেকে
প্রকাশ করতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি
আমাকে
এখন হাঁটু গেড়ে ছদ্মবেশের আড়ালে আত্মগোপন করতে হয়
শরীরের
রক্তবিন্দুগুলোকে কেমন যেন
শীতল
মনে হতে থাকে
অথচ, ভাব দেখাই আমার
শরীরের কোনও অংশীদার নেই
পিছুটান
নেই
নিজ
সত্তাকে টেনে তুলতে চাইলাম অবশেষে
প্রকাশ
করতে চাইলাম নিজেকে
শিরদাঁড়া
টানটান করে কপালে চিহ্ন আঁকলাম চুলের গোপনে
কত
আর করবো ছল
ধারালো
চোখের হাত থেকে নিস্তার পেতে.....
একদিন
শুধু মৃত্যুই থাকবে বেঁচে
আমরা
কি এখনও শুনতে পাচ্ছি না মৃত্যুর শব্দ?
এখনও
কি মৃত্যু ভয়ে কাঁপছে না
দুটি
পা?
কোন
সুখের টান?
কোন
সুখের টানে মৃত্যুকে করছি আমন্ত্রণ
কাঁচপোকার
মতো খাদান কাটছি তো কাটছিই
খাদান
কেটে কেটে মোরাম করছি লুঠ
ওদিকে
শিশিরের শব্দে জলাশয়ে জলাশয়ে দু’বেলা ছেনে যায়
চকচকে
প্রমোটারী চোখ
শূন্য
করছি জঙ্গলের গভীরতা......
পৃথিবীর
এক ভাগে বাসের ছাড়পত্র পেয়েছি মাত্র
অথচ, তিন ভাগ জলকেও
করছি তো বিষ
যে
জল জীবনের সমান
পারদ
ঊর্ধ্বমুখী, খামখেয়ালি আর সব
মৃত্যু
হাতছানি দিয়ে ডাকে ঘোর অমাবস্যায়
পৃথিবীর
চার ভাগে একদিন শুধু মৃত্যুই থাকবে বেঁচে....
কুলীন
পত্রিকা এবং
দেশ-এর
মতো পত্রিকায়
আমার
লেখা ছাপা হয়নি কখনও
সেখানে
নাকি কুলীন সম্প্রদায়ের ভীর
আমি
সে ভীর ঠেলতে পারিনি
সুতরাং
আমি জাতে উঠতে পারিনি
আমি
জাতে উঠতে পারিনি বলে আমার ছোঁয়া মাড়ানো নিষেধ
আমার
নাম নেই
আমি
কবি নই, লেখক নই
দেশ-এর
পাতা আমার জন্য নয়
আমার
দু’চারটি
লেখা যেখানে ছাপা হয়
সেসব
এলেবেলে ক্ষুদ্র পত্রিকা
সেসব
নাকি এতটাই ক্ষুদ্র আর অচ্ছুত যে, নাক ছিটকোয় কেউ কেউ
অথচ, আজ দেশ-এর মুখ
উজ্জ্বল করছে যারা
তাঁরা
এক সময় আমার মতো এলেবেলে পত্রিকায় আঁচড় কেটে
হাত
পাকায়
এখন
তাঁদের নাকি ফুরসৎ নেই
পেছনে
তাকাবার....
অরুণ কুমার
সরকার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন