ভ্রমণকাহিনী
এক
অসাধারণ
নির্জন তাকদা এবং তিনচুলে
অসাধারণ
নির্জন তাকদা, তিনচুলে এবং চমকে দেওয়া উপহার; সঙ্গীহিসেবে মনোরম কুয়াশা ঘেরা সন্ধ্যা
....................আসলে প্রকৃতির পাশে নিজেকে নিয়ে ভাবাটা বাতুলতা মাত্র, বড়ই তুচ্ছ। চারপাশে প্রকৃতির এতো
সৌন্দর্য তখন মন ভাল করা পাখিরা যেন ভালোবাসার গান গেয়ে যায়, কানে কানে বলে যায় কতোকিছু, আর সেই মুহূর্তে সেখানে দাঁড়িয়ে সবাইকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে
দেখতে ইচ্ছে করে।
তখন জীবনে কি পেলাম আর কি পেলাম না তার টুকরো টুকরো হিসেব নিকেশকে বড্ড হালকা মনে
হয়।
বাড়িতে ফেরার সময় মনটা কেমন করে ওঠে। আসলে বেড়াতে গেলে হৃদয় দিয়ে অনুভব
করতে হয় সবটা। যেখানেই যাই তা একবেলার জন্য গেলেও মনটা মিশিয়ে দিই সেখানকার মাটি
আর মানুষগুলোর সাথে। অদ্ভুত ভালোবাসা পাই প্রতিবার-ই। এবারেও একটা ঘটনা ঘটল।
সন্ধ্যাবেলা ঘন কুয়াশায় অসাধারণ মিষ্টি মিষ্টি হাওয়া ছেড়েছে তখন। আমরা হাঁটছিলাম
ধীরপায়ে, এক দোকানে চকলেট, চিপস, বিস্কুট, কেক এসব কিনতে গিয়ে
গল্প শুরু হল। নেপালি সেই বিক্রেতা দাদার অমায়িক ব্যবহার কখনো ভোলার নয়। অনেকটা
সময় কাটালাম ওখানকার ইতিহাস শুনে। এছাড়া দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে অন্যান্য চা-র
গুণাগুণ বা পার্থক্য নিয়েও আলোচনা করলেন। একমুখ হাসি নিয়ে
বিদায় জানাবার সময় বললেন "আবার আসবেন কিন্তু"।
আমার
মনে হচ্ছিল বহু বছরের চেনা কোনোজন। অদ্ভুত হৃদয় দিয়ে চোখে চোখ রেখে কথা বলছিলেন।
কতো গল্প -কতো কথা। পরে হোটেলে ফিরে সেই দোকানে কেনা খাবারের প্যাকেটটা খুলতেই
আবিষ্কার হল আরো একটি বাদামি রং-এর প্যাকেট। একটু অবাকই হলাম, বাদামি রংএর প্যাকেটটা খুলতেই দেখি সেই
অসাধারণ দার্জিলিং চা............
সখী
ভালোবাসা কারে কয়।
এ
ঋণ শোধ করি কিভাবে ........
তাকদা
দার্জিলিং এর মূল শহর থেকে কম বেশি ৩০ কিলোমিটার দূরে। এখান থেকে
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না কিন্তু দেখা যায় দিগন্তবিস্তৃত ঘন সবুজের সমারোহ আর
বিখ্যাত সমস্ত কোম্পানির চা বাগান। উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ পর্যটনের সেরা জায়গাগুলোর
মধ্যে অন্যতম। অপূর্ব নৈসর্গিক শোভা তাকদার অন্যতম আকর্ষণ।
এখানে পর্যটকদের থাকার জায়গাগুলো পাহাড়ের উপর দিকে আর যারা চা বাগানের কাজ করে
তাদের থাকার জায়গাগুলো নীচের চা বাগানের কাছেই। রাত্রিবেলায় যখন ঘরে ঘরে আলো জলে, মনে হয় আকাশে তারারা নেমে এসেছে
পৃথিবীর বুকে। অপূর্ব সুন্দর সে অনুভূতি। এছাড়া তাকদা অর্কিড
সেন্টারে রংবেরঙের অর্কিডও মনকে মাতিয়ে রাখতে পারে সহজেই, আর আছে অসাধারণ বৌদ্ধমন্দির, মনকে আবিষ্ট করছিল যা অতি সহজেই। সেখানে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল
পৃথিবীতে কোনো কোলাহল নেই, অশান্ত নেই, হিংসা নেই, দ্বন্দ্ব নেই। আছে শুধু শান্তির
বাতাবরণ। মনকে বিশুদ্ধ রাখতে এই প্রাঙ্গণ-ই যথেষ্ট। যেদিকে দৃষ্টি যায়
সেদিকে শুধু আকাশছোঁয়া পাইন গাছ আর সবুজ চা বাগান মনকে ভাল করে দেয়।
এছাড়াও
তাকদা থেকে খুব সহজেই ঘুরে নেওয়া যেতে
পারে রিশপ, লাভা, পেডং, সিলারিগাঁও, কালিংপং এসব
জায়গাগুলো। ব্যস্ত এবং শহরে জীবনে অভ্যস্ত মানুষেরা ক্লান্ত একঘেয়ে জীবন থেকে দুটো দিন একটু
নিরিবিলিতে যারা কাটাতে চান, তাদের জন্য অন্যতম
সেরা ঠিকানা হতেই পারে তাকদা। এখান থেকে দার্জিলিং গাড়িতে মাত্র এক ঘন্টার পথ, তাই
তাকদা থেকে খুব সহজেই নষ্টালজিক
টয়ট্রেন আর কাঞ্চনজঙ্ঘার শোভা উপভোগ করা জীবনের অন্যতম সেরা ভ্রমণ তালিকায় স্থান
পেতে পারে।
তাকদায়
রাত্রিবাস করতে পারেন তাকদা হেরিটেজ বাংলোয় ইংরেজ আমলে তৈরি করা বাংলো। এখন আরো নতুন রূপে, বাংলোর সামনে সবুজ ঘাসের লনে বসে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে
যাওয়ার প্রচুর সুযোগ। লেপচা ভাষায় কুয়াশা মানে তাকদা। আকাশছোঁয়া উঁচু উঁচু
পাইন গাছের জঙ্গল ঢেকে যায় সেই কুয়াশায়। ভেতর দিয়ে আঁকা
বাঁকা পথ।
উঁচু-নিচু পাহাড়ের ঢাল ধরে নজরকাড়া সবুজ চা বাগিচার ঢাল। রাস্তার দুই ধারে
সাদা, গোলাপি এবং হলুদ রঙের ধুতরো ফুলের সারি।
বিকেল গড়াতেই সাদা তুলোর মত উড়ে এসে চারদিক আবছা হয়ে উঠেছে কুয়াশায়।
কোনও কোনও সময় ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে পাথুরে রাস্তা ভিজে সার হচ্ছে। এরই মধ্যে ছোট ছোট পাহাড়ের কোলে নজর পড়েছে
শতাব্দী প্রাচীন বৃটিশ স্থাপত্যের নমুনা, পাথরের
তৈরি ছোট - বড় বাংলো।
তার
কোনোটায় আবার নিচে রয়েছে বিশ্বযুদ্ধের সময়কার লুকনো বাঙ্কারও। এখনও এক কোণে
মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইউরোপিয়ান ক্লাব। একটু দূরেই রয়েছে
এক সময়কার এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্কিড সেন্টারও। আর এর কিছুটা
দূরত্বে এবড়ো থেবড়ো পাথুরে রাস্তা দিয়ে
প্রায় ২০০ মিটার উঠলেই পাইনের জঙ্গলে ঢাকা পাহাড়ের মাথায় নজর কাড়বে "সোনপুর
হাউস"। বিহারের প্রসিদ্ধ সোনপুর মহারাজার এক সময়কার ছুটি কাটানোর
বাংলো।
তথাকথিত
রাজা, মহারাজাদের প্যালেসের আদল নয়, পুরোটাই " কলোনিয়াল " স্থাপত্য।
১৯০০
সালের পর ব্রিটিশ উচ্চ পদস্থ অফিসারদের অতি পছন্দের জায়গা হয়ে ওঠে সোনপুর হাউস।
তারপর থেকে এলাকায় তৈরি হয়, একই রকম ছোট-বড় মোট
বারোটি বাংলা।
১৯১৫
সাল নাগাদ দার্জিলিং মহকুমার তাকদা সারা বিশ্বে পরিচিত লাভ করে " ব্রিটিশ
ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া " হিসাবেই।
৩১- এ জাতীয় সড়ক দিয়ে গেলে রম্ভি হয়ে তিস্তা ভ্যালি এবং রংলি। রংলিওট চা বাগান পার হলেই তাকদা। আবার কার্শিয়াং হয়ে জোড়বাংলো থেকেও তাকদা
পৌঁছানো যায়।
একসময় ঘোড়া সওয়ারি করেও সাহেবরা এলাকায় গড়ে তোলেন ব্রিটিশ ' কলোনি '। এমনকি, লোবস ডায়েরি ফার্ম, চকলেট কারখানা, কেভেনটার্সের
ডেয়ারিও তৈরি হয়। এশিয়ার অন্যতম
সম্ভ্রান্ত গ্রাম হিসেবে তাকদার একসময়
পরিচিতও ছিল। সব এখন ইতিহাস। এখন তাকদাকে
কেন্দ্র করে পর্যটকেরা মংপু,
তিনচুলে, লামাহাটার মতো এলাকাগুলো অনায়াসেই ঘুরে
আসতে পারেন। তেমনই আছে অসাধারণ সুন্দর
কয়েকটি চা বাগান। ঘন্টা খানেকের মধ্যে তো আছেই শৈলশহর দার্জিলিং।
বেসরকারি তো বটেই সরকারি স্তরেও তাকদার আরো পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রচার করা
দরকার তাহলে তাকদা পর্যটন মানচিত্রে
জোরালো ভাবে ঠাঁই পাবে।
তাকদা
থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে তিনচুলে। দুচোখ ভরে কাঞ্চনজংগাকে দেখা আর উপভোগ
করার অন্যতম সেরা জায়গা।
তাগদা থেকে সকাল সকাল বেরিয়ে একটা বেলা তিনচুলেতে কাটানো জীবনের অন্যতম স্মরণীয়
দিন হয়ে যেতে পারে।
তবে
তিনচুলে গেলে একটা রাত্রি অন্তত থাকা উচিত, কারণ? কারণটা খুব সহজ, সকাল বেলা কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য
দর্শন।
এতো অসাধারণ এবং মনোময় যা কল্পনা করা যায় না। ভোরের সূর্যালোক
কাঞ্চনজঙ্ঘাকে করেছে অপরূপা। এতো সৌন্দর্য আর
এতো রূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার যা এখানে না এলে জানা সম্ভব নয়। এছাড়াও আছে পাইন
গাছের জঙ্গল। পাহাড়ের গায়ে কোথাও কোথাও অ্যাসেলিয়ার ঝাড়ও আছে। লিলি, অর্কিড নিজেদের মতো করে সৌন্দর্য
ছড়িয়েছে অনেকটাই। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে পেছনে তাকালেই গাছের ফাঁকে ফাঁকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখা যায়, মনে হয় আমাদেরকেই যেন অনুসরণ করছে। আহা
কী মনোরম সে দৃশ্য।
এখানে
সুন্দর সুন্দর হোম স্টে, ঝলমলে আলোতে হোম
স্টেগুলো আরো যেন ঝলমলে।
অসাধারণ সব পাখি, একটা পাখি আবিষ্কার
করলাম যার নাম আলতাপরী। সুন্দর সুন্দর রং বাহারি পাখির মতোই এই পাহাড়ি পথের
সৌন্দর্য, যে সৌন্দর্য বারবার যেন পালটে যাচ্ছিল। কখনও মেঘমুক্ত
আকাশের নীচে বিস্তৃত চা বাগানের সবুজ গালিচা বিছানো প্রাঙ্গণ, কখনও আবার কালো মেঘের আসা যাওয়া ।
আলো আর ছায়ার যেন যৌথ প্রতিযোগিতা কে কিভাবে নিজেদের রূপকে তুলে ধরতে পারে ।
কখনও আবার এক পশলা বৃষ্টি যেন আকাশ বাতাস মাটিকে ভরিয়ে তুলছে এক অনাবিল ভালোবাসায়।
সকাল, বিকেল, সন্ধ্যায় তিনচুলে যেন নানান রঙে সেজে উঠেছে। কখনো সাদা মেঘের
আস্তরণ পাহাড়কে ঢেকে রেখেছে , মনে হচ্ছে সুন্দর
ঘোমটা দিয়ে আছে, যেন সে এক লাস্যময়ী কন্যা, আহা প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য এখানে না এলে তো জানতেই পারতাম
না।
এখানে আসলে আর যে ফিরে যেতে মন চায় না। পৃথিবীর সব দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা সহজেই মুছে যায়। অবাক হয়ে দেখতে ইচ্ছে করে এখানকার স্থানীয় মানুষের মুখ, কতো নিঃস্ব অথচ কতো সারল্য।
জীবনে হয়তো কিছুই নেই, অথচ ওদের হাসি মাখা
মুখ বলে দেয় ওরা কতো ভাল আছে, ওরা কতো সুখী। আসলে
ভাল থাকাটা নির্ভর করে মানুষের মনের ওপর, আর মনের চালক স্বয়ং আমরাই। তাই বিশুদ্ধ
অক্সিজেন নিতে আমাদের এখানে আসতেই হবে।
এরপর
এখান থেকে সহজেই যাওয়া যেতে পারে তিনচুলে
কিম্বা উল্টোটাও মানে তিনচুলে হয়ে তাকদা। এছাড়াও তাকদা থেকে খুব সহজেই ঘুরে
নেওয়া যেতে পারে রিশপ, লাভা, পেডং, সিলারিগাঁও, কালিংপং এসব
জায়গাগুলো। ব্যস্ত এবং শহরে জীবনে অভ্যস্ত মানুষেরা ক্লান্ত একঘেয়ে জীবন থেকে দুটো দিন একটু
নিরিবিলিতে যারা নিজেদের মতো করে কাটাতে
চান, তাদের জন্য সেরা
ঠিকানা হতে পারে তাকদা। এখান থেকে দার্জিলিং গাড়িতে মাত্র এক ঘন্টার পথ, তাই
তাকদা থেকে খুব সহজেই এখানে এসে নষ্টালজিক টয়ট্রেন আর কাঞ্চনজঙ্ঘার শোভা
উপভোগ করা জীবনের অন্যতম সেরা ভ্রমণ তালিকায় স্থান পেতে পারে।
কিভাবে যাবেন -----নিউ
জলপাইগুড়ি থেকে তাকদার দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। কালিম্পং থেকে ৩৩ কিলোমিটার আর দার্জিলিং
থেকে ৩০ কিলোমিটার। গাড়ি ভাড়া করে সহজেই আসা যায় এখানে। নিউজলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে সোজা
তিনচুলে যাওয়া যায়, সেখানে একদিন দুদিন থেকে তারপর সেখান থেকে সোজা তাকদা । সেক্ষেত্রে ভাড়া ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা। এছাড়া সেয়ারেও যাওয়া যায়, ভাড়া একজনের ২০০টাকা।
দুই
সিকিমের প্রান্তরে
জঙ্গল
আর বন্যপ্রাণ কার না ভালো লাগে। চলুন কম খরচে ঘুরে আসা যাক সিকিমের সেই সব
সৌন্দর্য ঘেরা- রহস্যময়-নিরিবিলি - শান্ত - মনোমুগ্ধকর নামচি ইয়াং ইয়াং সামাটার ছালামথা
রাবংলা। প্রতিদিনের জীবনের একঘেয়েমি আর ক্লান্তি দূর করতে মাঝে মাঝেই মন চলে যায়
সেই সুদূর নীলাকাশ আর সবুজে ভরা প্রান্তরে । সত্যিই মনটা কি এক অনাবিল আনন্দে ভরে
ওঠে ।
নামচি
প্রায়
৪৪০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দক্ষিণ সিকিমের সদর শহর নামচি। চারধারে সবুজ পাহাড় আর তার-ই মাঝখানে
কুয়াশাঘেরা নামচি। নামচি শব্দের অর্থ হল "sky
high"। এটি সিকিমের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও
গুরুত্বপূর্ণ শহর। এখানকার প্রাকৃতিক শোভা খুব-ই মনোরম। বেশ কিছু বিলাসবহুল হোটেলও
আছে এই নামচিতে। স্কুল - কলেজ দোকানপাট রেস্তরাঁ
হাসপাতাল হোটেল- সব মিলিয়ে এক জমজমাট পাহাড়ি শহরের রূপেই সজ্জিত নামচি। এখানকার
সেন্ট্রাল পার্কটি মনকে মাতিয়ে দেয়। খুব
সুন্দর সাজানো গোছানো। সুন্দর বসার জায়গাও
আছে,চারদিকে বিভিন্ন দোকানপাট
আছে আর আছে একটি বিশাল মাপের একুরিয়াম।
সন্ধ্যার পরে এখানে বসে সময় কাটাতে ভালোই লাগে। নামচিতে অনেক কিছুই দেখার আছে, আর আছে বিভিন্ন মন্দির।
নামচির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল "সিদ্ধেশ্বর ধাম" যেটি "চারধাম " বলেও পরিচিত। এটি একটি অসাধারণ দর্শনীয় স্থান।
হিন্দুদের সব ধাম এখানে একসাথে দেখতে পাবেন। পাহাড়ের ওপর এমন অসাধারণ স্থাপত্যের
নিদর্শন খুব কমই আছে। নামচি শহর থেকে দূরত্ব মাত্রই ৫ কিলোমিটার। ২০১১ সালে ৫৬ একর
জমির উপর নির্মিত হয়েছিল এই চারধাম। ভারতের চারপ্রান্তের চারটি বিখ্যাত মন্দিরের
অনুকরণে এখানে নির্মাণ হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ, গুজরাতের দ্বারকা, পুরীর জগন্নাথধাম (সব ক’টিই বিষ্ণুমন্দির) ও
তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম (শিবমন্দির) মন্দির।
এখান
থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা সমেত অন্যান্য তুষারশৃঙ্গের অপরূপ দৃশ্য যেমন দেখা যায়, তেমনই চোখে পড়ে
বিস্তীর্ন সবুজ উপত্যকার এক সুন্দর দৃশ্য। নামচি ও তার আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো
দেখতে অন্তত একদিন লাগবে। আর এখানে আছে ১০৮ ফুট উঁচু শিবমন্দির যার ওপরে অধিষ্ঠিত
আছেন ৮৭ ফুট উচ্চতার শিবের বিশালাকায় মূর্তি। না দেখলে সত্যিই মিস করবেন। বয়স্ক
মানুষদের খুব ভাল লাগবে এখানে আসলে। এই নামচি থেকেই গাড়ি করে একটি ছোট গ্রাম সাদাম
সান্তালে থেকে ঘুরে আসা যায়। ওখানে একটি সুন্দর দর্শনীয় স্থান আছে যা দেখলে মনটা ভাল হয়ে যায় আর মুগ্ধ হতেই হয়। "তারে ভির" - খুব মনোরম একটি জায়গা, যেখান থেকে পুরো
কালিম্পং শহরটি দেখা যায়। নামচি শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তারে ভির
হল প্রকৃতপক্ষে মোরগঝুঁটির মতো দেখতে একটা ক্লিফ। এখান থেকে বহুদূর দেখা যায়। সবুজ
নদী উপত্যকার মনোরম দৃশ্য, তিস্তা ও রঙ্গিত নদীর সঙ্গম,পাহাড়ের ঢালে চা -বাগানের
সৌন্দর্য,
সবই দেখা
যাবে ভিউপয়েন্টে দাঁড়িয়ে। ক্লিপের ওপর বাঁধানো রাস্তা ধরে হেঁটে হেঁটে শেষ প্রান্ত
পর্যন্ত চলেও যাওয়া যায়,অপূর্ব সব দৃশ্য দেখা যায় যা চোখ ও মনকে আবিষ্ট করে তোলে
সহজেই। আর এখানে আছে পাগলা হাওয়া। কোনো কিছু ছুঁড়ে দিলে হাওয়ার টানে সেটি আবার
আপনার কাছেই ফিরে আসবে।
একদা
পর্যটন মানচিত্রে ব্রাত্য হলেও কয়েকবছর হল নামচিতে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে পর্যটকের
সংখ্যা। এছাড়াও এখানে দিন দুয়েক অবস্থানে গাড়ি ভাড়া করে দেখে নিতে পারেন রক
গার্ডেন,হ্যান্ডিক্রাফট সেন্টার,নেপালি ও ভুটিয়া দের
প্রাচীন বৌদ্ধ গুম্ফা এবং অবশ্যই টেমি টি গার্ডেন। নামচি থেকে রাতের দার্জিলিং
অসাধারণ লাগে। যারা ট্রেক করতে ভালবাসেন তারা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে
ডামথাংয়ে পৌঁছে ৯ কিলোমিটার ট্রেক করে
পৌঁছে যেতে পারেন মৃত আগ্নেয়গিরি টেনডংয়ের শীর্ষে।
কিভাবে
যাবেন----নিউ জলপাইগুড়ি থেকে নামচির দূরত্ব ১০৮ কিলোমিটার। গাড়ি ভাড়া করে এ পথে
সময় লাগে চার ঘণ্টার মতো। আবার শিলিগুড়ি এস এন টি বাসস্ট্যান্ড থেকে নামচির দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার। গাড়িতে সময়
লাগে তিন ঘন্টার মত ।
কোথায় থাকবেন
---নামচিতে রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে অনেক হোটেল।
ইয়াং
ইয়াং
যারা
আরো একটু নিরিবিলিতে থাকতে চান,তারা যেতে পারেন সিকিমের নতুন একটি জায়গা, নাম ইয়াংইয়াং বা
ইয়াঙ্গা। সাউথ সিকিমের একটি ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। কিভাবে যাবেন তাই তো? শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকগামী
যে কোনো গাড়িতে উঠে পড়লেই হল। সব গাড়ি রংপো, সিংথাম হয়ে গ্যাংটক যায়।
সিংথামে নেমে পড়তে হবে। এটি সিকিমের একটি অন্যতম ব্যস্ত জায়গা,বড় মার্কেট আছে। সিংথামে
খুব একটা ঠান্ডা নেই বললেই চলে । এখান থেকেই ইয়াঙ্গার গাড়ি পাওয়া যায়। সিংথাম থেকে
পাবং ফটক হয়ে ইয়াং ইয়াং যাবার পথে তিস্তা নদীর ধারে আরও একটি ছোট পাহাড়ি গ্রাম
পড়বে মাঙ্গলে। মোটামুটি এক ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ইয়াঙ্গা। এখানে ভীষণরকম
ঠান্ডা। এই সুন্দর পাহাড়ি গ্রামের মানুষ জন ভীষণ সহজ সরল এবং খুব ই আন্তরিক। পাহাড়ের
ওপর ভোরের সূর্যোদয় থেকে বিকেলের সূর্যাস্ত, শীতকালে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায়
সাদা বরফের মখমলের মোহময়ী রূপ -আহা কি অপূর্ব তার শোভা। আর সন্ধ্যার পরেই উল্টো
দিকের পাহাড়গুলোতে সব বাড়ির আলোগুলো ঠিক যেন হাজার হাজার জোনাকি পোকার মতো জ্বলে
ওঠে। রাতে হাল্কা ঠান্ডা সবসময়ই থাকে, আর শীতে তো বেশ কনকনে টনটনে। মাঝে মাঝে চারদিকে মেঘ ঢেকে যায়, কিছু দেখা যায় না। খোলা
জানলা দিয়ে মেঘ ঘরে ঢুকে পড়ে অনায়াসে। এখানে একটি বিশাল পাহাড় আছে,যার নাম "ভালে
দুঙ্গা", উচ্চতা প্রায় ১১০০০-১২০০০ ফুট। ভালে দুঙ্গায় মেঘের আনাগোনা শুরু হয়
দুপুরে,
আর বৃষ্টি
হয় বিকেলে এবং রাতে। এখানে একটু বেশী বৃষ্টি হয়। শীতে পাহাড়ের ওপর বরফ জমে
থাকে। এই পাহাড়টার জন্যে এখানে খুব বেশি
ঠান্ডা পড়ে। এখানে দার্জিলিংয়ের মতো জলের
কষ্ট হয় না,
এখানে
অফুরন্ত জল,আর এই জলের উৎস ঝরনার
জল। এখানকার মার্কেট বেশ সাজানো গোছানো। সুন্দর বসার জায়গাও আছে। প্রাকৃতিক দৃশ্য
মনোরম,চারদিক পাহাড়ে ঘেরা। লোকাল ট্যাক্সি নিয়ে একটু ইয়াঙ্গা ঘুরে নিতে
পারেন কালচার পার্ক, বিভিন্ন
মন্দির,হেলি প্যাড, একটা ছোট লেক,নয়া ফলস এবং বেশ কিছু
মনেষ্ট্রী। যারা একটু নিরিবিলিতে একটু পাহাড়ি শোভা উপভোগ করতে চান, এখানে তাদের বেশ লাগবে।
এখানে বাঙালি খাবার পাওয়া যায় ভালোই। এছাড়া এখানকার স্থানীয় কিছু খাবার ও ভালোই
লাগবে,যেমন -মোমো,থুকপা,ছুরপি,সায়েল রোটি, আচার ইত্যাদি। যারা খুব
ঝাল পছন্দ করেন তারা এখানকার লঙ্কা খেয়ে
দেখতে পারেন - ডল্লে খুরসানি। এখানে দারুণ সুন্দর লাউ - কুমড়ো পাওয়া যায়। প্রতিটি
বাড়িতে একটি সবজি পাওয়া যায়,সেটি হল "ইস্কুস ", এটি স্থানীয় নাম,যাকে আমরা স্কোয়াস বলি।
এখানে লোকাল কিছু ড্রিঙ্ক পাওয়া যায়,প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি,যেমন -রক্সি, ধুংরু, কোদো কো জার ইত্যাদি।
এই কোদো কো জার একটি কাঠের উঁচু লম্বা পাত্রে দেওয়া হয় এবং সরু বাঁশের পাইপ দিয়ে
খেতে হয়। এখানে কেউ রাস্তায় কিছু ছুঁড়ে ফেলে না। সিকিমে ওপেনলি সিগারেট খেলেই পুলিশ
ধরবে আর সঙ্গে সঙ্গে স্পট ফাইন। সুতরাং খেয়াল রাখবেন এই বিষয়টি।
সামাটার
সিকিমের
নতুন অচেনা আকর্ষণীয় ভ্রমণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এই সামাটার। নীলাভ
সবুজ রঙা রঙ্গিত নদীর তীরেই অবস্থান
সামাটারের। এর উচ্চতা ১৪৬০ ফুট। দুর্বার স্রোতের রঙিত এখানে দেখবার মতো। অপূর্ব
নৃত্যবিভঙ্গে এঁকেবেঁকে তার পথ চলা। চারপাশে নিবিড় গাছপালার ঠাসা উচ্চকিত পাহাড়ি
ঘেরাটোপে। নুড়ি - পাথরের ধাক্কা খেতে খেতে সফেন ঢেউ ওঠে নদীর বুকে। নদীর জল এখানে
স্পর্শ করতেই পারেন। ইচ্ছে করলে মন খুলে
দু দন্ড গল্পও করতে পারেন তার সঙ্গে। থাকার জায়গাটির অবস্থান একদম নদীর ধারেই।
মাচাং ঘরে বসে চা কফি সহযোগে নদীর ঢেউয়ের ওঠানামা,কুলকুল শব্দে নিমগ্ন হয়ে
কাটিয়ে দিতে পারেন বহু সময়। পায়ে হেঁটে ঘুরে নিতে পারেন কাছের শিবমন্দিরটি। নদীর
পাড় দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতে পারেন অনেকটা দূর পর্যন্ত। নদীতে মাছ শিকারীদের সঙ্গে হয়তো দেখা হয়ে
যাবে আপনার। এখানে রয়েছে ঝুলন্ত সেতু। রোথক, যার এ পার, মানে সামাটার হলো
দক্ষিণ সিকিম,
আর এ
পারটা হল পশ্চিম সিকিম ।
নিউ
জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে যাঁরা দীর্ঘ গাড়ী যাত্রা করে পেলিং হি-পাতাল রাবংলা
একদিনে পৌঁছতে চাইবেন না,তাঁদের পক্ষে আদর্শ জায়গা হবে রাস্তার মাঝামাঝি
অবস্থানে থাকা এই সামটার। সুন্দরী রঙ্গিতের
নিবিড় সান্নিধ্যে একটা রাত কাটিয়ে পরদিন পাড়ি দিতে পারেন অন্য গন্তব্যে।
আবার বহু পর্যটক নিখাদ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মজে গিয়েই হয়তো দুটো দিন কাটিয়ে
দিতে পারেন এখানে। যাদের নামচিতে
রাত্রিবাসের পরিকল্পনা নেই, তাঁরা এখান থেকে নামচির
দর্শনীয় স্থান গুলো দেখে নিয়ে চলে যেতে পারেন অন্য গন্তব্যে।
যাত্রাপথ ----নিউ
জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সামটারের দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। গাড়িতে সময় লাগবে আড়াই
ঘণ্টার মতো। পুরো গাড়ি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ২৮০০-৩০০০ টাকা।
কম খরচে আসতে চাইলে শিলিগুড়ি এস এন টি থেকে শেয়ারে জিপে জোরথাং ভাড়া
মাথাপিছু ২০০ টাকা। বাসও চলে জোরথাং অবধি। জোরথাং থেকে সামটারের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার
।
ছালামথাং
দক্ষিণ
সিকিমের এক নতুন আকর্ষণ,নতুন পর্যটনকেন্দ্র। এখনও পর্যটকদের কাছে ভীষণ ভাবে অপরিচিত
এই জায়গাটি। তবে নির্মল প্রকৃতির অমোঘ টানে পর্যটক সমাগম বাড়াতেও সম্ভবত বেশি
সময় লাগবে না। উচ্চতা ৫ হাজার ৮০০ ফুট। থাকাটা হোমস্টেতেই,যে হোমস্টে আবার উৎকর্ষতার
বিচারে পুরস্কারও পেয়েছে। পারিবারিক আতিথেয়তা, আন্তরিকতায় মুগ্ধ হবেন প্রতিটি
মুহূর্ত। গ্রামের ক্ষেতের বেগুন, মিষ্টি আলু, চালকুমড়ো, আদা, মুলো,শিম,আলু, এলাচ,মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি যে শুধু দেখেই আহ্লাদিত হবেন তাই
নয়, সেগুলো যখন খাদ্য হিসেবেও
পরিবেশিত হবে লাঞ্চ বা ডিনারে, তখন তো স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দের সীমা থাকে না। ঘরের
ছাউনি দেওয়া মাচান- ঘরটিও ভারি সুন্দর। চোখ যতদূর সম্প্রসারিত করা যায় ততোদূর
অবধি দৃষ্টি যায়। দূরে অনেকটা নিচে সিংতাম ও রানিপুলের পাহাড়ি জনপদের ছবি। সবুজ
উপত্যকার মধ্য দিয়ে তিস্তার আঁকাবাঁকা সর্পিল
পথচলা,পাহাড়ের গায়ে সাং,পান্ডোম ইত্যাদি জায়গা,আরও উপরে নাথুলা অঞ্চলের বরফে
ঢাকা পর্বতশ্রেণী ---সব মিলিয়ে এক দারুন ছবি ধরা পড়বে চোখে, চাইলে তাকে লেন্সবন্দিও করা যেতেই পারে। দুটো রাত থাকলে,পরের দিন সকালে কিছু
হাঁটা,
কিছুটা
গাড়িতে দেখে নেওয়া যায় আশপাশের দর্শনীয়
স্থানগুলো। সদ্য উদ্বোধন হওয়া চমকপ্রদ
মঙ্গলধাম,বহু অর্থ ব্যয়ে
নির্মিত রাধাকৃষ্ণের মন্দির শিল্পনৈপুন্যে সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে,লাভদাঁড়া ভিউপয়েন্ট,ঘন জঙ্গলে ঢাকা দুর্গম
পাহাড়ি পথে লুকনো গুহা বনঝারি, রামিতে ভিউ পয়েন্ট, তিস্তা উপত্যকার অনেকটা অংশ,একশ ষাট বছরের প্রাচীন ‘হেরিটেজ
হাউস'(লিম্বু সম্প্রদায়ের), দেওয়ালি ভিউ পয়েন্ট
ইত্যাদি দেখে নেওয়া যায় সুন্দর ভাবে। আঁধার নামলে মাচান ঘরে বসে আবার অন্য এক রূপ
দেখা, আহা! রানিপুল,সিংতাম জনপদের ঝলমলে
আলো,পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত
জনপদগুলির,
বিজলি
আলোর ঝলমলানি দেখতে দেখতে মনে হবে, নির্জন প্রকৃতির
কোলে আলস্যমাখা এ অবকাশের স্বাদটা কিন্তু
ভারী মিষ্টি। যাত্রাপথ শিলিগুড়ি থেকে.......
রাবংলা
রাবাংলো
দক্ষিণ সিকিমে এক অসাধারণ সৌন্দর্য নিয়ে
বিরাজমান এবং দক্ষিণ সিকিমের সর্বোচ্চ পর্যটককেন্দ্র হল এই রাবংলা। উচ্চতা ৭০১৬ ফুট। সুউচ্চ মৈনাম পাহাড়ের
পাদদেশেই অবস্থান রাবংলার। অবস্থানগত কারণে এখানে মেঘ - বৃষ্টির খেলা চলে। মৈনাম পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে মাঝেমধ্যেই জলভরা
মেঘ বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে,বছরের বিভিন্ন সময়েই রোদ্দুর আর বৃষ্টি টানাপড়েন চলে
এখানে। নরসিংহ,পান্ডিম খুব ভালোভাবে
দৃশ্যমান এখান থেকে। তবে কাঞ্চনজংঘা সহ
বাকি তুষারশৃঙ্গের খুব ভালো দৃশ্য পেতে
গেলে একটু কষ্ট করে ঘন্টা পাঁচেকের হাঁটায় উঠে আসতে হবে মৈনাম পর্বত চূড়ায় (উচ্চতা
১০৫৬০ ফুট)। এখান থেকে আরো ঘন্টাখানেকের হাঁটায়
ঘুরে আসতে পারেন ভালেদুঙ্গা থেকে।
দু জায়গা থেকে হিমালয়ের অসাধারণ রূপ দেখতে পাওয়া যায়,এই সৌন্দর্য
ভোলার নয়। তবে এই ট্রেকিং-এ যেতে
গেলে গাইড আবশ্যক,নয়তো
পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে। ট্রেকিং যদি না
করতে চান,
তবে গাড়ি
ভাড়া করে দেখে নিন আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো। নবনির্মিত সুদৃশ্য বুদ্ধ -পার্ক, রালং মনাস্ট্রি (পুরনো
ও নতুন দুটোই),
টেমি টি
গার্ডেন,
হ্যান্ডিক্রাফটস
সেন্টার,
পবিত্র
গুহা, রাবংলা মনাস্ট্রী
ইত্যাদি দেখে নিন এক যাত্রায়।
যাত্রাপথ--- নিউ
জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রাবংলার দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার,গাড়ি ভাড়া করলে খরচ পড়বে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা, কম খরচে ঘুরতে
চাইলে শিলিগুড়ি এস এন টি থেকে বেলা বারোটায় জিপ ধরতে পারেন মাথাপিছু আড়াইশো
টাকা। বাসও আছে ওই জায়গাতে বেলা একটায়,মাথাপিছু ভাড়া ১০০ টাকা।
তাছাড়া শিলিগুড়ি থেকে নামচি জিপে ১৫০ টাকা মাথাপিছু।
মণিজিঞ্জির সান্যাল: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন