দীর্ঘ কবিতা
চাঁদে
কলঙ্ক রপ্তানি করি। সাড়ে খোদাই করা অক্ষরগুলো বেঁচে আছে। দেহ থেকে কঙ্কালকে
মুক্তি দিয়েছি। সুদ বাড়বে না জেনে কষ্ট হয় প্রতিদিনের মুসাম্বিলেবুর। রেকর্ড
সংখ্যক অমানবিকতা এই পৃথিবীর অন্য কোনো পৃথিবী না ভাঙুক। তাই রোবোটের কোলে মাথা
মাথা রেখে ঘুমোতে চেয়েছি। রোবোটের নৃশংসতা যে কোনো মূল্যে গিলে নেবে আমাকে। মরে
যাবার পর আত্মানীল আলোটুকু হাড়ছাড়ানো মুরগি। আলো কেটে কুটে খাই ও খাওয়াই। আমার
দেশে ছেঁড়া সুতো ও ঘুড়ি বৃষ্টি ছাড়াই বেঁচে আছে। সবসময় অতিরিক্ত স্বপ্নের
শিশুরা গর্ভে হাততালি দেয়। আমার কমাচিহ্নের মতো কুঁকড়ে আসা শরীর এক প্যাকেট
টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন পেয়ে ঢেঁকুর তোলে। বোকা ও গরীব সাইকেলের রঙ হলুদ রাখতে
হবে রাষ্ট্র বলেছেন। তাদের কষ্টগুলো উঠতি গায়কের গলায় জমে থাকা বরফ। গলায়
পাঁচফেরতা আবেগ। চাঁদ থেকে নোনতা জোছনা ঝরে। আমাকে টাকার পালক লাগিয়ে উড়ে যেতে
দ্যাখে হলুদ বেসিনের নিওন চোখ। ঘৃণা ছাড়া আর কিছু ছুঁড়ে দেবার নেই।কবিতা হত্যা
করার ওষুধ জেনে গেছি বলে আমাকেও মরতে হবে তাড়াতাড়ি। ঘুমিয়ে থাকা আমাকে দেখায়
ভালো বলে খুব ঘুমোই মেঝে থেকে চাঁদ অবধি। নুয়ে থাকা ঈথার দরজা বাঁচিয়ে রেখেছে
আমাকে। ডুবোজাহাজ ও উড়োজাহাজের টয়লেটে হস্তমৈথুনের হিসেব লেখা। পচা বীর্যে
মুরগির বাসি টক ঝোলের গন্ধ। নামিদামি চেয়ারের গোদা পায়ের তলায় আমার কবিতার
ইমেজারি চাপা পড়ে আছে। পাতালযোনিতে বাসের
দশবছর পূর্ণ হল। অপরিশোধিত অশ্রু নিয়ে মুস্কিলে পড়ার লোক আমরা ছিলাম না। বৃহত্তর
স্বার্থে উজানি তেল আর অশ্রু মিশিয়ে পাচার করেছি কতোবার। আন্দাজ করো আন্দিজ
পর্বতমালা মুখস্থ করে চটিখোলা ও লুকানোর দুপুরে যাবতীয় শরীর দোভাষী হয়েছিল।
লালকেঁচো বাঁধা কব্জির ফ্যাশন অমর। তোমাদের কাছে জিগোলোর পেটখারাপ হলে শিঙমাছের
ঝোল খায় এ এক তাজ্জব ব্যাপার। মেয়ে তুলতে তুলতে চলেছে উৎসবের মূর্ছনাগুলো। ঐ
মূর্ছনা ময়ূরের পালকে কিছুটা ছড়ানো। পরষ্পরকে চুরিতে অনুমতি দিয়ে এখন বাতকর্মের
গন্ধ বিচার করি বারবার। ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসে লৈঙ্গিক ফুলচাষ। খুঁজে ফিরি গান
গাওয়া কবর। আমার নন্দিনী দিয়ে সুড়ঙ্গ যাত্রা করে আমার বন্দিনী ভেদ করে বেরিয়ে
গেল ধূমকেতুপ্রাণ। এখন মোহনায় পৌঁছে আমরা
সবাই সহ অভিনেতা। যাবতীয় ক্ষত চাটাচাটিও কতো আন্তরিকতার। জল থেকে তরঙ্গ তুলে
নিলেও তরঙ্গ মরার আগে শীৎকার দিয়ে মরে। আমার মরা চোখের ঐশ্বর্য কিছুটা হারিয়ে
দিয়েছ তুমি। সিঁদ কেটে সে ঐশ্বর্য চুরিতে ছিল উত্তেজনা। আসলে উত্তেজনার কাছে অন্য
সব চাওয়া ম্লান হয়ে যায়। দুঘন্টার ক্ষীরে হাজারটা প্যানিং করা মুহূর্ত। সীমানা
কাটার সময়ে বুঝি কতো ফুটকি ও অর্বুদের মেঘ জীবনে কাজে লাগে নি। যতোই ঝলঝলে পোশাক
পরি ততোই ভিতরে গজায় খন্ড খন্ড হাত পা। আমাদের আছে বিস্কুটের বার্বি বুড়োবয়সের
ষষ্ঠী ঠাকুরণ। কার্টুন ঘরদোর সাজায়। পঞ্চসায়রের জলে শেষ তর্পণ। শেষ শ্রাবণী
ঝুলনের কুইনি প্রতিমা। পুতুলের নগ্নতা নিয়ে মাছরাঙাদের সংসারের পাশে বসি। ছবির
ফিসফাস আর আর্তি শয্যার আয়তাকার ভেঙে ফেলেছে।
দেবযানী বসু: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন