একটি হলুদ বিকেল অথবা ঝিঙেফুল কাব‍্য





দীর্ঘ কবিতা


ছবিটা দেখছি ছাপাশাড়ি মাটি থেকে।
বিদিশার কালো ভাঁজের ঊরুতে সোমত্ত বয়স
ঘুরপাক খাচ্ছে,অনিবার্য ঝড়ের মতো,,
তা ক্রমশ নেমে যাচ্ছে পায়ের পাতা ফাঁক করে
পতন অতলান্তে।
সে আর তাকাতে পারছে না পূবের দিকে
তার স্নায়ুদেশ থেকে উড়ছে না বোধরংয়া প্রজাপতি
যে গাছের মাথায় হাত বুলিয়ে বুকের যন্ত্রনা সবুজ
নুইয়ে পড়ছে ছাই ও ছায়ায়।

ইস! পতন ঝোরা ঝরছে
যেদিকে তাকাই কোনো রং নেই
বর্নহীন বল্কলে কতক্ষন ধরে রাখি চৈত্রকণা
রাত হয়ে যাব
ছায়া ছায়া দহনের ভেতর যে বীজ জন্মাবে
চিনে নেবে ফুল প্রজাপতি।
রং ফুলের স্নায়ু,কোমলতা সুর
সুরের মূল শুকিয়ে গেলে পাখির কূজন হাহাকার
অনেক সুর চাই আমার,অনেক রং

সমস্ত ইচ্ছে আগুনের উপকরণ,তেজের কণা
এই দহনচক্রে স্থির হয়ে সেরে নিই যোগ
শিকড়বাহী মৌল পথে আশ্চর্য এক বোধ
যে আমাকে লড়াই শেখায়,শুদ্ধ রক্তের

তিনি অদৃশ‍্য আড়াল
তাঁর কোনো মূর্তি দেখি না
শুধু দেখি পূবদিকের আবেগ,
সেই আবেগ মৃত্তিকায়
পূর্বজন্মের সাধ অংকুর হতে চায়
বাসক তুলসী চন্দনে।

জন্মই জন্মান্তরের ভোর
তারই দুচোখ আঁকতে চেয়ে এত আমি ভ্রূণকাতর
এসো জননী,এসো মাটিমা
নাভি পেতে ধরো
জন্মের দায় জননীর কর্ম তার ললাট
সেই ললাট মাদুরে যে রাহু ঘুমায়
সেই রাবণ,সেই দুঃশাসন
বিজয়ার দেবী জানে কনকাঞ্জলির ব‍্যথা।
তবু মরণ তো শেষ নয় মরণে
জীবনও পুর্ণ নয় জীবনে
আলো ছায়ার পাকদন্ডী রেখায়
ওঠানামার সাপ লুডো খেলা।
জানি এ সন্তর্পণ থেমে যাবে রক্তে দেয়ালে
ধূলিকন‍্যা মেয়ের বুকে রাহুর হাঁ
তবু লড়াই তবু পথ
জীবন ছাড়িয়ে মহাজীবনের দিকে
মরণ ছাড়িয়ে মহামরণের পথে
পথই প্রগতি ,পথিক সন্ন‍্যাস
খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলে মহাকালের চোখ
সৌন্দর্যই হবে সত‍্যের পোশাক
চেতনা তার ছায়া
ওঁ ধ্বনীতে শ্বাস ভরে বাড়বে জন্মমৃত‍্যু
সুর আলো অক্ষর,,

এই ইচ্ছেটাকে কেউ বোলো না কুহক
এই আবেগটাকে প্রসব করতে চেয়েই
খুঁজছি সূর্যের ঔরষ।
জীবনের প্রতীক আগুন,তাই,,
রান্নার ছলে চিবিয়ে আয়ু বাড়াই সহিষ্ণুতার
মা বলে আগুনে নারীর ঘর
তাপে ভাপে সেদ্ধ হও শুদ্ধ হও।

তারপর আমি স্থির,বধির বিবশ
শ্বাস চেপে ধরছে কেউ
দাগজন্মের বালুচরে ঝরছে অবৈধ রাত
এখান থেকে ঠাওর হয় না আলোর দেশ
প্রাণের ভিতরে যে জ্বেলেছিল দীপসারি,কুয়াশা কাতরতায়
আঁকতে পারিনি তার হৃদয়ের ছবি
যে মুখ ছাপিয়ে কেঁদে যায় বাঁশপাতা নারী
ঝাঁকে ঝাঁকে থোকায় থোকায়।

স্বপ্ননারী পাথর হলে বৃষ্টিনারী পিরামিড
থানকুনি অন্তরে লেগে থাকা মাটি
ক্ষরণে মরণে অঙ্গার, চিতাকাঠঅতঃপর,,,
আমিও রাতের চিত্রলেখা,মৃত ছবিঘর
নক্ষত্র পতন চোখে দেখতে থাকি,তখনও লেখামাসী
চাবুকের দাগগুলো জড়ুলচিহ্নে সাজিয়ে রেখেছে
লক্ষ্মীঝাঁপিতে;এও নাকি ধর্ম!

কী অদ্ভুত এই নদীকাল,আহা কী অপূর্ব দহন!
তার কয়েক ঢেউ পেরিয়ে দেখি প্রেমের শব
মন ভেঙে বসে আছে মাধবী
অশ্রু শ‍্যাওলা চেঁছে
কেউ প্রজাপতি পাড়ার বিকেল দিল না তাকে;
বুকের দাগ গোলাপী হতে গিয়ে
স্বপ্ন ফাটার দুঃখ থেকে বেরিয়ে এলো
কাঁঁটা কোজাগর
যে চলে যায় বসন্তে, বৈশাখে ফিরে এলে
মাটি ফাটার কষ্টে চোঁয়ায় বাবলাফুল নদী
অনাগত শ্রাবন অভিসার
স্নায়ুর কাঁপণ,অনুভব
সে এলো না

এ দহনের কোনো রং নেই;শিউরে ওঠা
বিকেলের দিকে তাকিয়ে আহত ঝিঙেফুল
স্তনঘাস দিয়ে হেঁটে যায়
একদলা ভালোবাসার আশায়----

খুকু ভূঞ্যাক: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত




1 টি মন্তব্য: