সাঁওতালি ভাষায় রবীন্দ্রচর্চা



প্রতিবেদন


আমাদের দেশের পশ্চিমবঙ্গ,বিহার,ওড়িশা এবং ঝাড়খন্ড এই চারটি রাজ্যজুড়ে আদিবাসী সাঁওতাল জনগণের বাস। এদের মাতৃভাষা সাঁওতালি। বহু প্রাচীন এই ভাষা। হাজার হাজার বত্সার আগে অর্থাৎ যখন আর্যগণ এদেশে আসেননি তারও আগে থেকে এই আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায় আমদের দেশে ছিল। সেই দিক থেকে বলা যেতে পারে এরা আমদের পূর্বপুরুষ। সাঁওতালি ভাষাতেই এরা কথা বলে এসেছে। আশ্চর্যের বিষয় আর্য ভাষাসমূহের নিকট পরাজয় স্বীকার করেনি এই ভাষা। বহুপূর্বে এই ভাষার কোনো হরফ ছিল না,লিখিত পুঁথি ছিল না। তবু মুখে মুখে সেই স্রোত চলে এসেছে। ১৩৭৫ বঙ্গাব্দে,ইংরেজি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে হারিয়াড় সাকামঅর্থাত্‍ সবুজপত্র পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – “সাঁওতালি ভাষা অন্য দেশের মাটি হইতে এদেশে আসিয়া আসন সংগ্রহ করে নাই,ইহা তাহারই জন্মভূমি। দেশ যদি মাতা হয়,ভাষা যদি সন্তান হয়,তবে বাংলাদেশের প্রথম সন্তান সাঁওতালি ভাষা। তাহাকে ঘৃণা করিলে কাহাকে ঘৃণা করা হয়,তাহাকে দূর করিলে কাহাকে দূর করা হয়?”প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মারাংবুরুপ্রেস থেকে প্রকাশিত এই হারিয়াড় সাকামপত্রিকার তত্কালীন সভাপতি ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক এবং প্রাক্তন অধ্যাপক ড. শ্রী সুহৃদকুমার ভৌমিক;সম্পাদক মণ্ডলীতে ছিলেন শ্রীমণ্ডল হেমব্রম,শ্রী ধর্মদাস কিসকু এবং বীরলিটা হেমব্রম।
  
সাঁওতালি ভাষা যুগ যুগ ধরে মুখে মুখে চলে এসেছে। লিখিত রূপ পেয়েছে বিগত উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে। তাও বিভিন্ন লিপি,কোথাও বাংলা,কোথাও রোমান,কোথাও দেবনাগরী এবং বর্তমানে অলচিকির মাধ্যমে। ১৯৭৯ সালের ৫ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু সৃষ্ট অলচিকিলিপিকে সাঁওতালি ভাষা শিক্ষার একমাত্র লিপি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে সাঁওতালি ভাষা। পশ্চিমবঙ্গ সহ বিহার,ঝাড়খন্ড,ওড়িশায় অলচিকি লিপির ব্যবহার বাড়ছে এবং ক্রমশই তা সমাদৃত হচ্ছে। এই রাজ্যগুলির শিক্ষাক্রম এবং পরীক্ষা ব্যবস্থায় সাঁওতালি ভাষা ব্যবহারের স্বীকৃতি মিলেছে। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়,মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্য স্নাতকস্তরে পড়ানো হচ্ছে। বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যেমন হাজারিবাগ,রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়,বিনোবাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়,দুমকা ও বাবা টিকা মাঝি বিশ্ববিদ্যালয়,ভাগলপুরে স্নাতকোত্তর স্তরে সাঁওতালি পাঠ্যক্রম চালু আছে। এ ছাড়াও এই রাজ্যগুলিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় সাঁওতালি ভাষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সাথে শুরু হয়েছে সাঁওতালি ভাষায় রবীন্দ্রচর্চা। এই প্রবন্ধের প্রতিপাদ্য বিষয় হল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কবিতা,গল্প,গান, প্রবন্ধ সাঁওতালি ভাষায় অনূদিত হয়ে সাঁওতাল জনগণ ও তাদের সংস্কৃতির মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পেরেছে বা এখনো হচ্ছে।

রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববন্দিত-বিশ্বনন্দিত কবি। জল-হাওয়া-আলোর মতোই আমাদের জীবনের পরতে পরতে তিনি মিশে আছেন। তিনি আমাদের আত্মার আত্মীয়,প্রাণের আরাম। রবীন্দ্রনাথে আমাদর মরা-বাঁচা,হাসা-কাঁদা। এশিয়া মহাদেশের তিনিই প্রথম কবি যিনি সাহিত্য সৃষ্টি করে বিশ্বের সর্বোচ্চ নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। এই বিশ্ববরেণ্য মহান কবি রবীন্দ্রনাথ সাঁওতাল জনগণকে খুবই প্রীতির চোখে দেখতেন এবং তাদের প্রতি ছিল তাঁর অকৃত্রিম অন্তরের টান। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে কবি শিলাইদহ ছেড়ে বীরভূমের শান্তিনিকেতনে চলে আসেন। ঐ বত্সিরই ২২ ডিসেম্বর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্মতি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ শুরু করে দিলেন ব্রহ্মচর্যাশ্রম। এই সময় থেকেই শুরু হল সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি

জনমুখী চিন্তা ও কর্মধারা। তখনই শান্তিনিকেতনের আশপাশ গ্রামগুলিতে বসবাসকারী সাঁওতাল পরিবরগুলির সঙ্গে ঘটল তাঁর পরিচয়। আদিবাসী সাঁওতাল মানুষগুলির সরল,সহজ-অনাড়ম্বর জীবন কবিকে যারপরনাই মুগ্ধ করল। তিনি অনুভব করলেন এই আদিবাসী মানুষগুলি যেন প্রকৃতির সন্তান। বনভূমির প্রান্তে সাঁওতাল পল্লীতে যখন আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ ওঠে, তার স্নিগ্ধ আলোয় ভেসে যায় চতুর্দিক এই সময় আদিবাসী পাড়ায় পাড়ায় বেজে ওঠে মাদলের বোল। আদিবাসী নারী-পুরুষেরা নেচে ওঠে গেয়ে ওঠে। সে এক আনন্দমুখর মায়াঘন পরিবেশ। অনবদ্য সে উত্স বকে নিয়ে কবি লিখলেন

দুন্দুভি বেজে ওঠে ডিম ডিম রবে
সাঁওতাল পল্লিতে উত্সেব হবে।
পূর্ণিমা চন্দ্রের জ্যোত্স্না ধারায়
সান্ধ্য বসুন্ধরা তন্দ্রা হারায়।
অন্যত্র সাঁওতাল মেয়েকবিতায় লিখলেন
যায় আসে সাঁওতাল মেয়ে
শিমুল গাছের তলে কাঁকর বিছানো পথ বেয়ে।

সাঁওতালদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ শুধু কাব্য-সাহিত্যই সৃষ্টি করেননি-সাঁওতাল জনগণের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে ছিল তাঁর অন্তহীন প্রচেষ্টা। সাঁওতাল সংস্কৃতির প্রতিও ছিল কবির গভীর শ্রদ্ধাবোধ। স্বাভাবিকভাবেই সেই রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান, গল্প সাঁওতালি ভাষায় যে অনূদিত হবেই একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেক দেরিতে হলেও সেই কাজ শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন তাঁরা হলেন প্রখ্যাত গবেষক এবং প্রাক্তন অধ্যাপক সুহৃদকুমার ভৌমিক,সারদাপ্রসাদ কিস্কু,চন্দ্রনাথ মুর্মু,রূপচাঁদ হাঁসদা,ধর্মদাস কিস্কু,শ্রীমণ্ডল হেমব্রম,রবিলাল মাঝি, দুর্গাচরণ হেমব্রম,জমাদার হেমব্রম,শুকলাল হেমব্রম,সাধুরাম হেমব্রম,বীরলিটা হেমব্রম,মনীন্দ্রনাথ মুর্মু, হরপ্রসাদ মুর্মু,পরিমল হেমব্রম,ধীরেন্দ্রনাথ বাস্কে,সাহেবরাম সরেন প্রমুখেরা।
  
ড. সুহৃদকুমার ভৌমিক,চন্দ্রনাথ মুর্মু,সারদাপ্রসাদ কিস্কু সহ এগারোজন বিশিষ্ট সাঁওতালি লেখক ও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিকাব্যগ্রন্থটির সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেন যা সেরেঞ সেপেঞনামে পরিচিত। ১৩৭৭ বঙ্গাব্দে হারিয়াড় সাকামপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এইসেরেঞ-সেপেঞগ্রন্থটিতে রবীন্দ্রনাথের ৩৬ টি কবিতার অনুবাদ রয়েছে। অবশ্য সেরেঞ সেপেঞ”- এ কিছু গানের নাম দেওয়া হয়েছে কবিতার ভাব অনুযায়ী, যা মূল লেখাতে নেই।

যেমন – ‘সেরেঞ হানসা’ – গানের পারে
দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে।
লাঁগা’ – ক্লান্তি
ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু
জাপুত্‍ রেয়া: সেরেঞ’ – বাদলা দিনের গান
পাগল হাওয়ার বাদল দিনেইত্যাদি ইত্যাদি।
  
রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত কবিতা প্রশ্নকবিতাটি রায়বারনামে অনুবাদ করেছেন রবিলাল মাঝি। ‘দুই বিঘা জমি’– ‘বার বিঘা হাসা’– অনুবাদ করেছেন চন্দ্রনাথ মুর্মু। লুকোচুরি’ – ‘ওকো এনেচ’ – অনুবাদ করেছেন মনীন্দ্রনাথ মুর্মু। রবীন্দ্রনাথের বহু কবিতা ও গানই এইভাবে সাঁওতালি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

এবার বলবো বরকা সরেন এবং তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী সরেনের কথা। বরকা সরেন একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। ইনি শান্তিনিকেতনে প্রথিতযশা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ও গোরা সর্বাধিকারীর তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রসঙ্গীতে তালিম নেন। বরকা সরেন যে ঐতিহাসিক কাজটি করেন  তা হল ১৯৯৩ সালে বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেন এবং রাবীন্দ্রিক স্বরলিপি এবং নিয়ম মেনে সেগুলি গেয়েছেন। পাঁচটি সিডিতে মোট পঁচিশটি গান তিনি প্রকাশ করেছেন। যে গানগুলি গাওয়া হয়েছে তার মধ্যে আজি ঝরো ঝরো মুখর(তেহেন ঝিপির ঝিপির জাপুট)’, ‘না। নাগো, না’ (বান বান না বান), ‘তুমি কোন কাননের ফুল’ (নাম ডো নোকা বাগানরেন বাহা), ‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে(এন হিলোক বারহোর ঝিলা লেনলান) ইত্যাদি।
  
বরকা সরেনের পথ অনুসরণ করে অনেকেই এখন রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছেন। তার মধ্যে জয়ন্তী সরেনের নাম উল্লেখযোগ্য। শুধু রবীন্দ্রনাথের গান বা কবিতাই নয় রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছেরঅনেকগুলি গল্পও সাঁওতালি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। যার নাম গামগাহলে
  
সাঁওতাল জনজাতির মধ্যে অনেক কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক জন্মগ্রহণ করেছেন। সাঁওতাল সমাজের জীবনবোধ,সংস্কৃতি,চেতনা তাঁদের লেখার উপজীব্য বিষয় হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের লেখাতে রবীন্দ্রনাথের দর্শন, চিন্তা-ভাবনা এসে পড়েছে।  একটা জিনিস স্বীকার করতেই হবে কবিগুরুর চিন্তার সঙ্গে সাঁওতাল সমাজের চিন্তার বিষয়ে যোগ আছে। বহু কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ নিজেকে পরমপুরুষ ঈশ্বরের পায়ে সঁপে দিয়েছেন। একইরকমভাবে সাঁওতাল সমাজের পরম পিতা হলেন মারাংবুরু। তিনি করুণাময়,ত্যাগী এবং বিশ্বসৃষ্টিকর্তা। এই দুয়ের কী আশ্চর্য মিল! রবীন্দ্রনাথ একটি গানে বলছেন

যদি বারণ করো তবে গহিব না,
যদি শরম লাগে মুখে চাহিব না।
যদি বিরলে মালা গাঁথা, সহসা পায় বাধা
তোমার ফুলবনে যাইব না
  
এই যে রোমান্টিক প্রেমের সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছেন এ তো যেন আদিবাসী মানুষগুলিরই প্রাণের কথা-যা তারা যুগে যুগে গেয়ে এসেছে। এই গানটিকে ধর্মদাস কিস্কু সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। তা হল এইরকম-

যদিস বারানিঞা, তবে বাইঞ সেরেঞ।
যদি লাজওওঅ: আঞ, মচাসেত্বাকইঞ বায় গা।
যদি ফাঁকরে মালা গালাং
হঠাত্‍ রাধাঞ ঞামা,
আমা: বাহা বীররে বাইঞ চালা: আ।
যদিস বারনিঞ তবে বাইঞ সেরেঞা।।
সেরকমই রবীন্দ্রনাথের আর একটি বিখ্যাত গান – “ক্লান্তি  

কান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু
পথে যদি পিছিয়ে পড়ি কভু।
এই যে হিয়া থরো থরো
কাঁপে আজি এমন তরো
এই বেদনা ক্ষমা করো, ক্ষমা করো প্রভু ।।
এই দীনতা ক্ষমা করো প্রভু
পিছন পানে তাকাই যদি কভু।
দিনের তাপে রৌদ্র জ্বালায়,
শুকায় মালা পূজার থালায়,
এই ম্লানতা ক্ষমা করো, ক্ষমা করো প্রভু।।

মান মণ্ডল হেমব্রম এই ভাবে এটির অনুবাদ করেছেন- লাঙ্গা

ইকা কাতিঞমে ইঞা লাঙ্গা চাঁদো,
তারম গদ: আঞ হররে যাঁহাতিশ।
নওয়া অন্তর থারা থারা
তেহেঞ নংকাগে। -
ইকা কাতিঞমে নওয়া হাসো, ইকা কাতিঞমে চাঁদো।।
নওয়া বাড়িচ ইকা কাতিঞমে, চাঁদো
কয়োগাঞ পাছে তায়মসেত্‍ যাঁহাতিশ,
সিঞ সিতঙ্গ লল জালাতে
রহড়: বোঙ্গারেনা: থারি মালা
ইকা কাতিঞমে অনাগসো, ইকা কাতিঞমে চাঁদো।।
   
 রবীন্দ্রনাথের এরকম অনেক গানই আছে যা কেউ না কেউ সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। এমন কি ড. সুহৃদকুমার ভৌমিক নিজেও বেশ কিছু গান সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। যা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের ও গর্বের বিষয়।    
   
স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বর্তমানে সাঁওতালি ভাষায় বহু পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। সাঁওতাল জনজাতি থেকে উঠে আসছেন বহু নতুন নতুন কবি-সাহিত্যিক। তাঁদের হাত দিয়ে আগামী দিনে রবীন্দ্রদর্শন যে সাঁওতাল সমাজে আরও গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়বে এটা আশাই করা যায়। অন্য ভাষাভাষি মানুষদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।

মঙ্গলপ্রসাদ মাইতি : কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন