প্যারোডি প্যারেড



বেতার নাটক

রাতদিন সাতদিন পত্রিকার সাংবাদিক, অনিরুদ্ধ রায়। অফিসে বসের গালাগাল, প্রেমিকার ফোন বিজি, আর বাবার.. 
( ফোন বাজার শব্দ)

বাবা- এই যে অপগণ্ড অনিরুদ্ধ, আজও কী ভোর ৪ টেয় পাড়া কাঁপিয়ে বাড়ি ফিরবেন?

অনি- নিজের নামের পর আমার নাম উচ্চারণ করলে শুনে ভালো লাগল

বাবা- চুপ কর অসভ্য বাঁদর। page3 তে নায়ক নায়িকার কেচ্ছা লিখে বেড়াও, লজ্জা করে না.. 
( pip pip)

অনিরুদ্ধর বস, মকরন্দ পুরকায়স্থ। কোনরকমে hs পাস হবে হয়তো, প্রচুর টাকা থাকায় একটা খবরের কাগজের অফিস খুলে বসেছেন। ওই ব্ল্যাক মানিকে কাদায় ফেলে সাদা করা আরকি.. 
অনিরুদ্ধ এম.এ ফার্স্ট ক্লাস। ব্রাইট স্টুডেন্ট।  অথচ বসের রোজ অপুটত্ব পান্ডিত্য শুনতে শুনতে সে বেচারা যাকে বলে, ছেড়ে দে বাপ,বেকার হয়ে বাঁচি অবস্থা... 

বস- অনিরুদ্ধ,তুমি সিরিয়া নিয়ে লেখাটা দারুণ লিখেছ।

অনি- thank you sir.

বস- কিন্তু ওটা তো ছাপা যাবে না ভাই

অনি- কেন?

বস- বিনোদনের পাতাটা বাড়ছে তো, সানি লিওনের একটা বড় ইন্টারভিউ পেয়েছি ওটা ছাপছি। তুমি বরং আজ রাতে ক্যালকাটা ক্লাবের পার্টিটায় যাও। ওটা কভার কর। পাবলিক হেব্বি খাবে।

অনি- কিন্তু স্যার সিরিয়া?

বস- আহা, আমেরিকা নিয়ে ট্রাম্প ভাবুক। আমরা ভেবে কি করব?

অনি- আমেরিকা? সিরিয়া আর আমেরিকা লিঙ্কটা কী স্যার?

বস- বুঝবে না। বুঝলে এই চেয়ারে তুমিই বসতে। যাও এখন

মধ্যরাত। ক্যালকাটা ক্লাবের পার্টি সেরে ফিরছে অনিরুদ্ধ। অনিরুদ্ধর পঞ্চম গার্লফ্রেন্ড শ্রমণাও, আজ ব্রেক আপ করে দিল। এদিকে অকাল বর্ষণ। কিন্তু ব্রেক আপের পর এক বুক ব্যথা নিয়ে ভিজতে তো বেশ লাগে।
অনিরুদ্ধর এক মিচকে কলিগ এক নায়িকার সাথে ওর ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করাতেই এই বিপত্তি। ফেসবুক এই কারণেই এক্কেবারে পছন্দ না অনিরুদ্ধর,ওর মতে it is fake book.
অনিরুদ্ধ dark,tall and handsome. ওর মহিলা ফ্যানের সংখ্যাও নেহাত কম না। পড়ে মার্ক্স, লেনিন। বিশ্বাসে নকশাল। লাইফে টক ঝাল, মিষ্টি নেই।
হ্যাঁ কিন্তু আমাদের মূলগল্প তো চানাচুর নয়, মূল গল্প হল, ঐ ঐ শুনুন
একজন গান গাইছে, (এই মিনতি করি তোমায়) 
তা যা বলছিলাম, অনিরুদ্ধ তো বাড়ি ফিরছিল। এদিকে পকেটে একমাত্র পারমানেন্ট প্রেমিকা বিড়ি শেষ। তারপর, নাহ। আর কথা না,এবার আপনারাই শুনে নিন।

গান - এই মিনতি করি তোমায়

অনি- ও, দাদা শুনছেন,

লোকটি- কিছু বললে ভাই?

অনি- বলছি বিড়ি হবে? বিড়ি?

লোকটি- বিড়ি?

অনি- না ইয়ে মানে। পকেটে একটাও নেই। এদিকে এত রাত,আবার বৃষ্টি..

লোকটি- বুঝেছি। নাও

অনি- আরিব্বাস। thanks a lot

লোকটি- (গান শুরু আবার)

অনি- বিড়িটা কেমন যেন পুরনো পুরনো লাগছে

লোকটি- কিছু বললে ভাই?

অনি- না না কিছু না।  গরীবের কিংসটোন,  তায় আবার নতুন পুরনো।

লোকটি- সবই চলে গেল রে ভাই, এই প্রেমিকাটি রয়ে গেল।

এমন বন্ধু আর কে আছে,তোমার মতো বিড়ি ( গান)

অনি- হাহাহা, যা বলেছেন। এনিওয়েজ আপনি কিন্তু দারুন গান করেন।

লোকটি - ধন্যবাদ ভাই।

অনি- আচ্ছা, আপনি এখানে এত রাতে বসে, বেশ নির্জন তো এখানটা।এখানে মানুষের দেখা পাব আশাই করিনি। তারওপর বৃষ্টি। যদিও এখন ধরে এসেছে।

লোকটি- গরীবের কী বা বৃষ্টি কী বা রোদ। মানুষ পাও না আর না পাও, বন্ধু পাবে। আমি বিশ্বকর্মা  কর্মকার। বিশু বলে ডাকে সবাই। এখানেই থাকি

অনি-এখানে? এখানে কোনো বাড়ি আছে?

বিশু- বাড়ি আছে কিনা জানিনা। বাসস্থান আছে। আরো অনেকেই থাকে

অনি- sounds interesting..  anyways.  আমি অনিরুদ্ধ, খবর রাতদিন সাতদিন

বিশু- সাংবাদিক? বেশ চল তাহলে।

অনি- কোথায়?

বিশু- ওই আমাদের আজ একটা সভা আছে।  চল, খবর করে দেবে না হয় একটা

অনি- এত রাতে সভা?

বিশু- হ্যাঁ, চলই না দেখবে কত উন্নত মানের জিনিস আছে.. .  

(সভা)
বক্তা ( বিজনেস ম্যান)-  সে বন্ধু গণ আজ একটা খুব শুভ মহরত আছে

বহ্নি- মহরত? কীসের মহরত? 

ধূর্জ্জটী - ওটা বোধহয় মুহূর্ত হবে বহ্নি। 

বিজনেস ম্যান- ইয়েস সম্পাদক বাবু, শুভ মুহূর্ত আছে। তো হামি বলতে চাই

বহ্নি- হামি দেয় মশাই, বলে না।

বিজ- সে বহ্নি মেডাম। আপনি একটু চুপ বসেন তো। আমার কথা টো আমায় বলতে দিন

বিশু- ইয়ে বলছিলাম কি,

বি- এই তো বিড়িবাবু ভি এসে গেল। তো সঙ্গে কোনো নিউ সদস্য আছে নাকি।

বিশু- ইয়ে পরিচয় করিয়ে দিই, ইনি অনিরুদ্ধ রায়, সাংবাদিক। কি যেন দিনরাত ভাই।

অনি- খবর রাতদিন সাতদিন

বহ্নি- কি রং আপনাদের?

অনি- আমরা নিরপেক্ষ ম্যাডাম। সত্যিকথা সৎভাবে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়াটাই আমাদের কাজ।

বহ্নি- ঘন্টা দুয়েক সঙ্গে ঢপ, ফ্রি তে পাবেন আলুর চপ

ধূ - নিরপেক্ষ is the most বিপদজনক পক্ষ।

বিশু- বলছি কি, পরিচয়টা আগে হোক। উনি বহ্নি ম্যাডাম, উনি ধূজ্জটি বাবু, আর উনি আগারবাল বাবু।

ধূ, বহ্নি- (হাসি)

বি- ইয়ে, বিড়িবাবু, আপনার প্রোনাউনসিয়েশন ঠিক করেন তো.. 

বিশু- ইয়ে সরি সরি।  তো আজ ওনার বিজনেসের সভা। তাই আমরা আজ এক হয়েছি। আজ এই সাংবাদিক একটা খবর করে দেবে বলেছে

অনি- এরকম কিছু বলেছিলাম?

বিশু- আরে চুপ করে শোনোই না।

বহ্নি - আলোয় চনা পড়িবে, পেটি বুর্জোয়া সভা করিবে। এই বিশু দা, একটা বিড়ি দাও তো

বিশু- এই নাও

বহ্নি - রক্তকরবীর শুভেচ্ছা নিও।

বিশু- কী?

অনি- লালছড়ি ময়দান খড়ি..  আলোচনাটা শুনুন

ধূ- তা, আপনার প্রোডাক্ট এর হাঁকডাক তো শুনলাম কিন্তু প্রোডাক্ট টা কী?

বি- air packet

অনি- বায়ূ থলি

ধূ- নাহ। গরীবের এরোপ্লেন

বিশু- হাওয়া পকেট, পকেট ভর্তি হাওয়া

বহ্নি- টাকা পয়সা হাওয়া করেছে এতকাল, এখন হাওয়া দিয়েই হাওয়া হবে

বি- সে আমায় পুরা কথা বলতে দেন। চারপাশে এত্ত পলিউশন রাস্তায় যাচ্ছেন মুখের সামনে গাড়ি ধোয়া ছেড়ে দিল,তখন এই চকচকে পেকেটে থাকা ভালো হাওয়া নিবেন। দিল হাওয়া হাওয়াই হয়ে যাবে

বিশু- ও শ্রী দেবী, মালতী যা নাচত না, বিজলি গিরানে ম্যায় হু আয়ি। 

ধূ- বিশু, শ্রীদেবী তে ফিরে এস, মালতীতে যেও না। আব্বার চোলাই নিয়ে চুলোচুলি করবে তাহলে।

বহ্নি- আচ্ছা বালবাবু, আপনার air pocket এর ধাপ্পাবাজিটা কেন বলুন তো?

বি- বহ্নি মেডাম, পরিস্থিতি গোলমাল করবেন না। শুনুন এয়ার পেকেট কিনবেন তো এই চিরুনী ভি ফ্রি পাবেন।

অনি - কেন? মানে? হাওয়ার সাথে চিরুনী কী কাজে লাগবে?

বি- দেখেন সাংবাদিক বাবু, রাস্তায় ধোঁয়া  উড়বে, হাওয়া নিবেন, চুল আচড়াবেন। হামাকে ধন্যবাদ দিবেন।

বহ্নি- আমি আপনার বিরূদ্ধে চিরুনী তল্লাসী করব, ২নম্বরি লোক একটা আমার চিরুনি টা চুরি করে নিয়ে এসে স্যাম্পেল দেখাচ্ছেন।

ধূ- আহ বহ্নি, তোমার চিরুনী আপাতত বিজ্ঞাপনে। সার্কাস টা দেখতে দাও।

বহ্নি- all bogous. আবার অপগন্ড সাংবাদিক জুটেছে একটা

অনি- এই বাবা ধরে টানবেন না?

বহ্নি- অপগন্ড আপনার বাবা। very good.  তাই রংহীন চামচিকে

অনি- শুনুন এই যে এত রাগ আপনার সাংবাদিকের ওপর কেন বলুন তো? 

বহ্নি- কেন মানে? আপনারাই তো শ্যাওলা কে নীল সাদা করেন, লাল আপেল খেতে খেতে রং দে তো মোহে গেরুয়া।

বিশু- শাহরুখের গান, রং দে তো মোহে গেরুয়া।

বহ্নি- এই বিশু দা, তোমাকে তোমার বিড়ি ছুড়ে মারব

বিশু- চটে যেও না বোনটি। চা খাবে?  বানাবো?

অনি- শুনুন বিপ্লবী ম্যাডাম, এই যে বলছেন আমরা এই, আমরা সেই, আমাদের কত সমস্যার মধ্যে কাজ করতে হয় জানেন? আর খবর যা পান, যা পড়েন সেগুলো আমাদের বসের মর্জিমাফিক।  আমাদের না।

বহ্নি- কাজ করেন কেন তাহলে?

অনি- খালি পেটে বিপ্লব হয় না? অন্ধকারে বৃষ্টিতে নির্জনে বসে তর্জন গর্জন করা সোজা.. 

বহ্নি- এই আমি না বাল নই যে, হাওয়া ছাড়ি খালি

বি- বোঝেন, বাবু টা ভি তুলে দিল। সভা টা তো কিচাইন করলই। এই মেছেলে গুলোই আছে কিচাইন কোম্পানি।

বহ্নি- এই মেয়েছেলে কাকে বলছেন?

ধূ- বহ্নি, শান্ত হও। এই বিশু তুমি একটু চা ই বানিয়ে আনো দেখি

অনি- বাব্বা, বিশু দা চা ও বানায়?

ধূ- বিশুর তো আগে চা বিড়ি সিগারেটেরই দোকান ছিল। বেশ ভালো বিক্রি ছিল

বিশু- আর ঘুগনিও ছিল। মালতী কী যে ভালো বানাতো

বহ্নি- আব্বার,

অনি- শুরু হল আবার, by the way ধূর্জ্জটী বাবু আপনি সম্পাদক শুনছিলাম তা কোন পত্রিকা?

বহ্নি- এই সাংবাদিক আপনি? ওনাকে চেনেন না?

বি- সে সাংবাদিক বাবু বলেন, উনি তো সে আমার বাবার আমলের লোক আছেন, আমার বাবা গণপতি কে নিয়ে সে কি ছড়াই না বাধল। বাবা তো সে সব লিয়ে বিহারে কেটে পড়ল।

ধূ- হাহাহা

অনি- মানে সে টা কী রকম?

ধূ- সে কি আর মনে আছে নাকি?

বহ্নি- আমার মনে আছে, আমি বলছি
কালোবাজারিয়া গো, ওকে আজ সাদা হতে বল না  (গান)
এ কালোয় সাদা দিতে জানি না, জানি না
ওকে কাদা নিতে বল না
গজপতি বলে তাকে নাম ধরে ডাকে
শূর নিয়ে সুড়সুড়ি কালো সাদা ফাঁকে
পেটালে পুলিশে,  পাবে না হদিশে
তবে তো তারাও আমার ধান্ধার
সে কি জানো না,
লকাপে নিয়ে যেতে পারবে না না না
কালোবাজারিয়া গো.  

বি- সে থামেন তো। এ ছড়া, গান হলো। বড়বাবু এসে বললে, গণপতি বাবু কেটে পড়েন। নয়তো সে আমাকে পাপকম্ম করতে হবে।

অনি- আরিব্বাস, আপনি তো গুরু লোক মশাই, আপনাকে তো কাল্টিভেট করতে হচ্ছে। পত্রিকার নামটা.. 

ধূ- হা হা হা

বহ্নি- দেখেছেন ধূর্জ্জটী দা, সাংবাদিক বটেও চোরও বটে, diolog - এ কি সুন্দর সত্যজিৎ পাঞ্চ করল.. 

অনি- আরে আমি

বহ্নি- যদিও বালবাবু, আপনার বাবার কপাল মন্দ সব সাজানো ঘটনার আমলে থাকলে, বিহারে পগাড়পার হতে হত না

বিশু- চা এসে গেছে, এই নিন

অনি- বিউটিফুল, এনিওয়েজ আমি কনফিউজড

ধূ- বিশু চা কী করে এত ভালো বানায় এই নিয়ে কনফিউজড?

অনি- না না, মানে, এই রাতের অন্ধকারে আপনারা এখানে এতজন, আবার  থাকেনও এখানে,  how it is possible? আপনারা কী হুলোবাদী?

বহ্নি- নিশ্চই, যে দুধের বাটি উল্টে দেয়, সমাজে রয় অথচ ঘোটালা সয় না, সেই হুলো... 
আমরা অন্ধকারে থাকি, বাল বাবু আলফাল বকেন ঠিকই তবে হাওয়া ছাড়েন, আগে পেটো, বোমা ছাড়তেন, এখন নিজেই ছেড়ে গেছেন তো, তাই হাওয়াই ভরসা।

ধূ - হুলোই বল, সন্ত্রাসবাদীই বল
আসলে সত্যি কথায় মানুষের ত্রাস
সেটাই তাকে করল গ্রাস
তাতেই সমূহ সর্বনাশ .. 

বহ্নি- সত্যিই ধূজ্জটি দা, তুমিই প্রকৃত বিপ্লবী জানো। তবে সব লড়াই তো কলমে হয় না।  মাঠে নেমে খোঁচা মারাটাও দরকার। কে আর অত বোধের দরজা হাট করে খুলে রাখে। মানুষ খাবারের জোগাড় করতে ঠোঙা বানাবে, কাগজ বই পড়ে কী লাভ?

বিশু- (হাততালি) বহ্নি ম্যাডাম খুব ভালো বলেছেন। খিদে বড্ড জ্বালা।  মালতীটা খুব ভালো ঠোঙা বানাতো। শালা সুরজটা.. 

বহ্নি - মালতীতে ঝুলে পড়ে গেল, তাতেও প্রেম ঘোচেনা। এই লোকজনের এত হিসি পাওয়ার মতো করে প্রেম পায় কেন কে জানে।

অনি- এই আপনি একটু জল খান তো। আপনি বিপ্লবী ক্যারেকটারে আছেন, ঝগড়ুটে ক্যারেকটারে যখন তখন ঢুকে যাবেন না।
বহ্নি- what rubbish.. 

অনি-বলছি কী চুপ করুন,
আচ্ছা, ধূজ্জটি বাবু আপনার নামটা আমার খুব চেনা। আপনি বা আপনারা হুলোবাদী হন আর whatever। আপনারা কারা? আপনারা এখানে কেন? আপনার পত্রিকার নামটা কী?

বি- লেফট রাইট কী যেন.. 

বহ্নি- অশিক্ষিত।। দ্যাট ইস, প্যারোডি প্যারেড।

অনি- প্যারোডি প্যারেড..  ধূজ্জটি। ধূর্জ্জটি প্রসাদ চৌধুরী 

ধূ- হাহাহা । চেনা চেনা লাগছে না? অনিরুদ্ধ বাবু

অনি- কিন্তু আপনি তো আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে গেছিলেন না? তৎকালীন সরকারকে নিয়ে আপনি কীসব কুরুচিকর লেখেন?

বহ্নি- সাচ হামেশা করবা হোতা হ্যায়, কী ঠিক বললাম তো বালু বাবু?

বি- বা! মেডাম। একদম দিলকে বাত বলেছেন। সে তিতো আছে।

বহ্নি- আর গরমেন্ট..  সে তো মধু খায়, উচ্ছে খায় না।

অনি- আপনার পত্রিকার অফিসে, আগুন লেগেছিল

বিশু- মিথ্যে, লাগানো হয়েছিল

অনি- কিন্তু আমি তো  শুনেছিলাম,  আপনার সহকারী তাতে পুড়ে যায়, আর আপনি পালিয়ে যান। মার্কেটে আপনার অনেক টাকা ধার হয়ে গেছিল।

ধূ- মিথ্যে, মিথ্যে..  দীপেন আমার সহকারী, ও আমায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছিল, ওই আগুন লাগিয়েছিল।

অনি- মানে, আমার সব গুলিয়ে যাচ্ছে। আর প্যারোডি প্যারেড তো বহুদিন আগের পত্রিকা, এখনো আপনি..  আমার সব জট পাকিয়ে যাচ্ছে

বহ্নি- এবার আপনি একটু জল খান অনিরুদ্ধ বাউ, নো আন্ডার গ্রাইন্ড নাথিং এলস। পুড়িয়ে মেরে দেওয়া হয় ধূর্জ্জটি দাকে।

অনি- what? 

বহ্নি- এতে অবাক হবার কিচ্ছু নেই। সানি লিওনের ইন্টারভিউ ছাপা হয় যাদের জন্য, তাদের গরমেন্টই পুড়িয়ে মারার প্ল্যান করে ধূর্জ্জটি দাকে।

অনি- সানি লিওনের ইন্টার ভিউ আপনি কী করে জানলেন?

বহ্নি- হাহাহা, আমরা সব জানি, এই যে বালুবাবু
এখন হাওয়া ছাড়ছেন, ওনার বউ ওনার বিজনেস পার্টনার কে নিয়ে ভেগে গেল। আর ওনার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে ওনারই হাওয়া বের করে দিলেন।

বি- চপ করেন ,চপ করেন মেডাম। সব মে ছেলে গুলো বেইমান আছে, এই যে, এই যে বিশু মালতীকে ইতনা পেয়ার করল, সুরজ কে লিয়ে কেটে পড়ল, এ শালা চোলাই এর মধ্যে বিষ দিয়ে খেয়ে নিলে.. 

বিশু- তুমি জানো নারে প্রিয়, তুমি মোর জীবনের সাধনা, (গান), মালতী মালতী, (কান্না).. 

বহ্নি- you are wrong, mr আগারবাল। মহিলারা প্রতারক হয় না সবসময়, আসলে সিস্টেম, সমাজ, বেসিক পচে গেছে। মানুষের ওপর বিশ্বাস রাখা পাপ, বুঝলেন, ভূত কখনো ভূত কে মারে না। ভূত কখনো ভূতকে ঠকায় না, মানুষই মারে so।। ভূতেদের ওপর বিশ্বাস রাখুন...

অনি- মানে ভূত?

ধূ- বহ্নি কে গুলি করে মেরে ট্রেনের তলায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ও, আপনার মতো সাংবাদিক ছিল, আমার কাগজেই।। আর পার্টি করত। ভালোবেসে, ধান্ধাবাজির জন্য নয়। নেতাদের কু কীর্তি ফাঁস  করে দিয়েছিল। ওকে কিছু মধুর প্রস্তাব দিয়েছিল এক উচ্চপদস্থ মন্ত্রী। আমায় বলে দিল, আমি প্যারোডি বানালাম। তাতেই ব্যাস সমূহ সর্বনাশ। 

বহ্নি- আমি বলছি ধূর্জ্জটি দা,
আমায় একটু সুযোগ দাও, তোমায় ছুঁয়ে দেখি
আমি অনাহূত একজন
অল্প ছোঁয়ায় খুশি,
ভেবোনা আমি মন্ত্রী বলেই
খপ করে তাই গিলে খাব
রাজিনীতিই বর্ম ,প্রীতিই ধর্ম
ছুঁয়েই তোমায় ছেড়ে দেব.  .. 

ধূ- ব্যাস যেই বেরল, আমি বহ্নি একসাথে শিফট ডিলিট।

অনি- 1 sec...  আপনারা ভূত?

বহ্নি- এত কিছুর পরও প্রমাণ দিতে হবে?

ধূ- সিরিয়া বুকে চেপে বেরিয়ে যান, ভূত হলে ঘাড় মটকাতে পারতেন..  যেমন আমি দীপেন কে বাঁচতে দিইনি। ওর গাড়ি সমেত জ্বালিয়ে দিয়েছিলাম.. .. 
(পড়ে যাবার শব্দ)

বি- যাহ, মরে গেল নাকি,

বিশু- ভাই অনি। নাহ, শ্বাস তো পড়ছে।

বহ্নি- মাঠে ফেলে রেখে এস, সকাল হলে জ্ঞান ফিরে বাড়ি চলে যাবে।

ধূ- আসলে মানুষ তো না। এত সত্যি কথা জেনে ফেললে, ভিরমি তো খাবেই।

বহ্নি- আমি বলি কী ধূর্জ্জটি দা, হয়ে যাক.. 

ধূ- বৃষ্টি র রাতে কে ভূতেদের সাথে
ডেকেছিল বিশু, আহা পড়ে গেছে ফাঁদে
আহা প্যারোডি প্যারেডে
সত্যি গরাদে, ভিরমি খেয়েছে সে
রিএল স্যাটারে
কী কান্ড কী কান্ড.. 
প্যারোডি প্যারেডে সত্যি সত্যি ভূত
নিতান্ত নিশ্চুপ, নয়
মটকে ঘাড়, পগাড়পার
হল না হল না, হল না
সাচ কি বাত, ভূতো কী সাত
নেওয়া গেল না,নেওয়া  গেল না.. 
প্যারোডি প্যারেডে ভূতেদের সাথে... 
কী কান্ড, কী কান্ড, কী কান্ড.. 

( ন্যারেটর- তাহলে,কী দাঁড়ালো?  সাংবাদিক অনিরুদ্ধ রায়,

অনি- আমি কোথায়?

ন্যারেটর- প্যারোডি প্যারেডে.. 

অনি- আমি আঙুর আদমি আছি..  রাম  রাম.. 


ন্যারেটর - হাসি)  


ঊষসী ভট্টাচার্য: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন