বসন্তঘর ও অন্যান্য কবিতা







কবিতা



বসন্তঘর 

তোমার ওই নিরুত্তাপ খুলতেই
ছিটকে গেল আলোদের উঁচুনিচু তরবারি
বসন্তঘর অবিশ্বাসী
ঘুম খুলে দেখি
কোনো মহাজন ছিল কী না
সারারাত বাইরে দাঁড়িয়ে ।






অনুবাদ

অনুবাদে যাচ্ছে পতাকা
অনুবাদে যাচ্ছে হাসিও
আমার হাতেও কিছু কাস্তে শাবলের
        অনুবাদ করে দেবার বায়না ।
ডজনদরে বিক্রি হচ্ছে অনূদিত ডিম
পেপারব্যাকে অনুবাদ কাঁচালংকারও
প্রান্তরের অনুবাদ... অনুবাদে যৌথপরিবার
আমি এবার নগ্নতার সনেটকে
মহাকাব্যে অনুবাদ করব ।






দোলপলাশের আপন চাঁদ

পাতা ঝরার সূচিপত্রে
খুঁজে পাই না বাংলা ক্যালেন্ডারের পাতার ক্রমিক ।
বর্ষশেষের আগের মাস
আমোদের মৌতাতে জড়ো করে লাল ।
ভোরের হাওয়ায় শিশুনিমের চোখের ঘুম
দুটুকরো করে দেয় বেয়াড়া কোকিল ।
উতল হাওয়ায় আড় মানে না হৃৎপিন্ডের আগল ।
জীবনের নিয়নে অভিমানের কালো জমাট
সহসা সেই আবির-মাখা আমন্ত্রণ টাওয়ারের পথ বেয়ে ।
দোলের সন্ধ্যা পুড়ে যাচ্ছে মশালপলাশের লাল আগুনে
সবাই আপন আপন চাঁদ সামলে রাখো
ও কিশোরী ও যুবতী ।





গৌরীগঙ্গা

প্রান্তরে পাগল ঘোরে ধুলো ঘেঁটে
হারিয়ে যাওয়াকে খুঁজে চলে
এ জীবনে স্বল্প সঞ্চয়ে চাই দীর্ঘরেখা সুখ
সেও কী আর এক পাগলামি নয় ?
কে কাকে গৌরী দেয়       গঙ্গা মেপে রাখে
শিরার শীতল খাঁজে লেখা থাকে অক্ষরগণনা
আমি আর দুচার দিন দেখে নিয়ে বাঁকাচোরা স্রোতে
যে কয়টি ফুল বাকি ঢেলে দিয়ে যাব
তবে তুমি বা কেমন যে একদিনও তরল ভিক্ষায়
নবনীত চোখেই মাখো না !





সুরার সোরাহি

কিছু কী ফেলে যাচ্ছি! কিছু কী ভুলে যাচ্ছি বেড়াতে বেরিয়ে পাখিটার ফেলে যাওয়া পালকের মোহে?ভিতরে অদৃশ্য তাড়া -- অতিথিরা বসে আছে সন্ধ্যাকে কর্ষণে মুড়ে দেবে বলেএমন অদৃশ্য হাতে আমার থাক্ না কিছু সান্দ্র উপহারতেঁতুলপাতারা দোলে যূথবদ্ধ ফলের সোহাগেতার থেকে আরো কিছু বেশি বেশি আশা থাকে মলয়সম্ভবা বাণী দক্ষিণের কাছেঅল্প এসো  গল্পে কৌতুকে এবং অবশ্য নিও সুরভরা সুরার সোরাহিঅশ্ব যায় অপরাহ্ণে অপহৃত প্রান্তরের খোঁজেঅস্ফুট বুটজুতোর শব্দে বর্ষা দূরে যায়আত্মপ্ররোচনা আমি বশ্যতার ধারা বলে ভাবি নদীতীরে ফেলে আসা ঘাসের চুপড়ি খুঁজে দেখ দেখি শৈশবের ফড়িং লুকিয়ে আছে কী না!

সুবীর ঘোষ: কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন