চাঁদের এত আলো





দীর্ঘ কবিতা

      
     - শুনুন! আমি এ সংসারটা তৈরি করেছিলাম
    সবাইকে নিয়ে থাকব বলে, গালগল্প সুখদু:খের
    বিনিময় করব বলে। আপনারা অনেকেই দেখচি
    ভাগবাঁটোয়ারা চান না। আমার সংসারে তাহলে
    আপনাদের আর ঠাঁই হবেনা, পরিষ্কার কথা।

-   আপনি আমার মেসেজের কোনও উত্তর না দিয়ে
খালি বুড়ো আঙুল দেখান কেন বলুন তো?
আপনার মনে কি কোনও কথার বুদবুদি ওঠেনা?

-   কি বললেন? কেউ হাসপাতাল করবে,
টাকা চাই? একবার এক উদার সেলিব্রিটি  
    এরকম রিকো পাঠিয়েছিলেন বটে। সেখানে আমি
    মোড অফ পেমেন্টও জেনে নিয়েছিলাম।
কিন্তু আপনার সেই ভিজিবিলিটি কই মশায়?

-   কতবার বলেছি, যখন ফ্রি হোম-ডেলিভারি,
আমার দেয়ালে কিছু লটকাবেন না।
কথা শুনলেন না তো? কাঁচি করলাম।

-   সোমালিয়ার বাচ্চাগুলোর ছবি ক-খানা
আপনাদের লিভিংরুমে টাঙিয়েছিলাম,
সরিয়ে দিলেন! দেয়াল নোংরা হবে বলে?
নিজের আই-কার্ড ঝকঝকে রাখতে চান?

   -গহন সমুদ্র’? আপনি আমার সংসারে মাথা
    গলাতে  চাইলে খোলস ছেড়ে বাইরে আসুন,
    এনআরসি সহ পুরো ফর্ম ফিল-আপ করুন।
    আমি রিস্ক নিইনা।
-   আপনি আমাকে ছবি বন্টনের জন্য
হুকুম দেওয়ার কে বলুন তো?
আমি ধর্ম-নিরপেক্ষ

  -কবিতা ভেবেচিন্তে পাঠান। 
   অসহিষ্ণুতা কারও কেনা গোলাম নয়।
   ভাববেন না, সেলিব্রিটি বলে পার পাবেন!

   -ভার্চুয়াল-কবি বলে দেগে দিলেন তো?
    দেখবেন, এখানেও একদিন মাল্যদান হবে।

   -দি-ভাই! কষ্ট করে একটা বা:লিখুন,
আমি স্টিকার অ্যালাউ করিনা। আপনাকে করলে
সবাইকে করতে হয়, কি করি বলুন?

-আপনি তো দেখি খুব সেয়ানা! অন্ন-ব্যঞ্জন
হোম-ডেলিভারির সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য করে বসলেন?
আরে ওটা তো বত্রিশ লাইনের ডি.টি.পি. ছিল!
ধরা পড়ে গেলেন তো? আপনাকে রাখি কি করে?

-আমি লক্ষ্য রাখছিলাম, কারা কারা ফিডব্যাক 
 না দিয়ে বসে বসে খায়। মুড়োনো চলছে

-কি বললেন? কবিতা চুরি হয়ে যাচ্ছে?
 প্রকাশিত কবিতা ছাড়া দেওয়ালে টাঙাবেন না।

    -কবিতা পড়ে শুধু লিখেছিলুম,‘কবিতা চলে গেল,
কবি রয়ে গেলেন।ব্যাস, ব্লক করে দিলেন?

-ব্লগের জ্যোৎস্নায় কালো মেঘের মাস-পিটিশন?
তোয়াক্কা থোড়াই! ড্রয়ার থেকে বার করে
নিজের বাগানে আবার পুঁতব।
নিষিদ্ধ আপেলের কাটমানি খেতে
দেখুন আদম-আদমীদের লাগাতার


-নববর্ষের মাসপয়লায় আমি একশো-তিরিশটা
কুলো পেলাম! বন্ধুরা! এবার আমায় রেহাই দিন
   
    -তোমাদের ভালবাসায় আমি আপাদমস্তক আপ্লুত।
     অনেকদিন হয়ে গেল, আর ভাল লাগছেনা।
     কাল থেকে আর এই নি:শুল্ক বাস্তুতে থাকচিনা।
                               গুডবাই

       -দাভাই/দিভাই! মিছেই মান অভিমান করছেন।
    অনেকেই এভাবে চলে গিয়ে আবার ফিরে এসেছেন!
    আমাদের ছেড়ে আপনি থাকতে পারবেন না। 
   
    চাঁদের একান্নবর্তী এই হাট ছেড়ে যাবেন না, প্লিজ
         

    শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় : কপিরাইট লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত

                     
      


1 টি মন্তব্য:

  1. নিঃসন্দেহে ভালো একটা কবিতা, অবশ্যই শক্তিশালী ব্যঞ্জনা এতে রয়েছে। কিন্তু ‘চাঁদের এত আলো’ পেলাম না। শ্যামলী বন্দোপাধ্যায়কে ভাবতে অনুরোধ করব। গাজী সাইফুল ইসলাম, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

    উত্তরমুছুন